ভাইরাস করোনার থাবায় ৮১১ জনের মৃত্যু, উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা

প্রকাশিত : ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। মানুষের মাধ্যমে ছড়ানো এ ভাইরাসে চীনে প্রতিদিন গড়ে ৫০-৬০ জনের প্রাণহানি ঘটছে। ভাইরাসটির শনাক্তস্থলে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে বাসিন্দারা। কেবল তাই নয়, চীনের সীমানা পেরিয়ে ভাইরাসটি এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আরও অন্তত ২৮টি দেশে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজিরা’ জানায়, সরকারি হিসাব অনুযায়ী রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত ভয়াবহ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৮১১ জনে পৌঁছেছে। তাছাড়া ভাইরাসটির সম্পর্কে আগেই সতর্ক করে দেওয়া চীনের আলোচিত চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং এরই মধ্যে মারা গেছেন। গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ভাইরাসের কেন্দ্রস্থল উহানে তার মৃত্যু হয়। মূলত এখান থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল। এর আগে গত ১২ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। তার শরীরে করোনা ভাইরাসের বিষয়টি ধরা পড়ে ১ ফেব্রুয়ারি। রোগীর দেহ থেকেই ভাইরাসটি লির শরীরে ছড়িয়েছে বলে দাবি চিকিৎসকদের।

সবমিলিয়ে চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৮ হাজারে পৌঁছেছে। যদিও বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা ৩৭ হাজারের বেশি। তাছাড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে আরও তিন লক্ষাধিক মানুষকে। বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতসহ বেশকিছু দেশে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্তদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।

এ দিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় মাত্র ১০ দিনে নতুন একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেছে চীন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে হাসপাতালটি রোগীদের চিকিৎসার জন্য উন্মুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। খবর সিএনবিসি।

আপনার মতামত লিখুন :