রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবিতে) আমরণ অনশনের ৩২ ঘণ্টা পার


প্রকাশিত : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের নাম ‘ফলিত পরিসংখ্যান’ করার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশনের বত্রিশ ঘণ্টা পার হয়েছে। অনশনে এই পর্যন্ত ২০ শিক্ষার্থী অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন রাতে এবং বাকি সতেরো জন সকাল থেকে প্রতিবেদনে লেখা পর্যন্ত অসুস্থ হয়। তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৩৯ এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে হাসপাতালে আসা শিক্ষার্থীদের অবস্থা ভালো না বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কয়েকজনকে অনশনস্থলে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অসুস্থ শরীর নিয়েও অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা। অসুস্থ হয়ে পড়া এসব শিক্ষার্থী হলেন মোবাশশির উল-হা, সোহাগ, তাসিন, নিশী, আবিদ হাসান, তপ্রী , আয়নাল, সাগর, লিজা, সুলেখা, আরিফ, তুহিন, নাইম, এনামুল, সাব্বির, রনক, পূজা, বিভা, মদিনা,অর্ণব। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপাচার্যদ্বয়, প্রক্টর, বিভাগীয় সভাপতি এবং অন্য শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীরা তাতে সম্মত হননি।

অনশনকারীদের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, কোনো বিভাগ নতুন শুরু করার একটা মাধ্যম রয়েছে। তোমাদের জন্য যেটা মঙ্গলকর হবে সেটিকে আমি বিবেচনায় নিবো। সেজন্য সকল বিভাগীয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের এবং প্রশাসনের বাইরেও যারা শিক্ষক আছেন, তাদেরকে নিয়ে আগামী ২ মার্চ সিনেট ভবনে একটা মিটিং করবো। তোমাদের বিষয়কোডের ব্যাপারে সিন্ডিকেট সভায় আলোচনা হয়েছে। সেটা খুব সম্ভবত কার্যকর হবে। কিন্তু বিভাগের নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে আমি নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারছিনা। আমরা দুপক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসতে পারি।

উক্ত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো নজরল ইসলাম মন্ডল বলেন, ভিসি স্যার ইতিমধ্যে দেখা করে গেছেন। শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। আগামী ২ মার্চ সিনেট ভবনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের দাবির সমাধান করার আহবান করেন। প্রশাসনের নির্দেশ ছাড়া আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবো না। শিক্ষার্থীরা বলেন, ভিসি স্যার বলেছেন বিভাগের সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষকের সাথে মার্চের ২ তারিখ বসবেন। তাহলে কি উনার সান্তনায় সপ্তাহ খানেক না খেয়ে থাকবো?

তারা আরো বলেন, গতকাল থেকে আমরা না খেয়ে আছি। কয়েকজনকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। রাতে প্রক্টর এবং সহকারী প্রক্টর ছিলেন। কিন্তু বিভাগের কোনো শিক্ষক ছিলেন না। আমরা কি তাদের সন্তান সমতুল্য হতে পারিনি? শিক্ষকদের পরিবার আছে, আমাদের পরিবার নেই?? দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
প্রসঙ্গত, পিএসসি’তে বিষয় কোড অন্তর্ভুক্তের দাবি জানিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তবে বর্তমানে বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ফলিত পরিসংখ্যান করার দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছে তারা।

আপনার মতামত লিখুন :

এই বিভাগের সর্বশেষ