ভারতকে ঠেকানোর জন্যই তালেবানের জন্ম দিয়েছে পাকিস্তান: সাবেক রাষ্ট্রদূত

প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট ২০২১

পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি জেনারেল পারভেজ মোশাররফের বরাত দিয়ে আফগানিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহমুদ সায়কাল বলেছেন, পাকিস্তানই ভারতকে মোকাবেলার জন্য তালেবানের জন্ম দিয়েছে। আফগানিস্তানের প্রাক্তন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতিসংঘ ও অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত মাহমুদ সায়কাল শনিবার এক টুইট বার্তায় বলেন, পারভেজ মোশাররফের মতে, ভারতকে মোকাবেলের জন্যই তালেবানদের জন্ম দিয়েছে পাকিস্তান। এবং পাকিস্তানের দুই কূটনীতিক এস এম কুরেশি (পিটিআই) এবং ইউসুফ মোয়েদ বর্তমানে তালেবানদেরকে সহায়তা করতে রাজি করানোর জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে তদবির করছেন”।

এসময় মাহমুদ সায়কাল হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ম্যাট ওয়াল্ডম্যান কার সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস পলিসি কেনেডি স্কুল অফ গভর্নমেন্ট থেকে প্রকাশিত “দ্য সান ইন দ্য স্কাই: দ্য রিলেশন বিটুইন পাকিস্তান’স আইএসআই অ্যান্ড আফগান ইনসার্জেন্টস” শিরনামের একটি গবেষণা পত্রের উল্লেখ করেছেন। প্রাক্তন এই আফগান রাষ্ট্রদূত পরবর্তী এক টুইট বার্তায় বলেন, “শুধুমাত্র পাকিস্তানের ওপর চাপ/অনুমোদন এবং শর্ত-ভিত্তিক সম্পর্কের নীতির মাধ্যমেই আফগানিস্তানে প্রকৃত ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হতে পারে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা যেতে পারে।”

মাহমুদ সায়কাল আরও বলেন, জাতিসংঘের একটি নতুন প্রতিবেদন আইএসআইএল-কেপি, তালেবান এবং আল-কায়েদার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের অ্যানালাইটিক্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড স্যাংকশনস মনিটরিং দলের সর্বশেষ প্রতিবেদনে (১২তম) বলা হয়েছে যে, আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার পাশাপাশি জঙ্গি সংগঠনটির বিশ্ব নেতৃত্বের একটি উল্লেখযোগ্য অংশও আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের সীমান্ত অঞ্চলে বসবাস করে। এছাড়া তালেবানের সঙ্গে যুক্ত আল-কায়েদা এবং অন্যান্য বিদেশী চরমপন্থী সংগঠনের অনেক সদস্য আফগানিস্তানের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান করছে।

আল কায়েদার নেতা আইমান মুহাম্মদ রাবি আল-জাওয়াহিরিও আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের সীমান্ত অঞ্চলের কোথাও লুকিয়ে আছেন বলে মনে করা হয়। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে এর আগে যে খবর বেরিয়েছিল তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আল-কায়েদা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট (একিউআইএস) এর সদস্যরা তালেবানদের ছত্রচ্ছায়ায় কান্দাহার, হেলমান্দ (বিশেষ করে বারামচা) এবং নিমরুজ প্রদেশে থেকে কাজ করছে। এই গোষ্ঠীটি মূলত আফগান এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের নিয়ে গঠিত, তবে এতে বাংলাদেশ, ভারত এবং মিয়ানমারের লোকজনও রয়েছে বলে জানা গেছে। এর বর্তমান নেতা ওসামা মাহমুদ, যিনি প্রয়াত আসিম উমরের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।

এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি তালেবান বিদ্রোহের এমন একটি অপরিহার্য অংশ যে একে এর তালেবান মিত্রদের থেকে আলাদা করা কঠিন হবে, যদিও অসম্ভব নয়। বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র তালেবানের সঙ্গে আলকায়েদার সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতার উল্লেখ করেছে এই বলে যে, তালেবানের সঙ্গে করা দোহা চুক্তির অংশ হিসেবে ২০২০ সালে আফগান সরকার যে ৫,০০০ তালেবান বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে তাদের মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশের আল-কায়েদার প্রাক্তন নেতা আসিম উমরের স্ত্রীও ছিলেন।

 

আপনার মতামত লিখুন :