বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় করোনা নিয়ন্ত্রণ কিট আবিষ্কারের দাবি শেবাচিম গবেষকদের

প্রকাশিত : ১৭ জুন ২০২০

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ও শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের শিক্ষকদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে করোনা প্রতিরোধক ডিভাইস (কিট)। এ ডিভাইসের নামকরণ করা হয়েছে কোভিক কিট (করোনা ভাইরাস কিলিং)। শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. এইচ এম মাসুম বিল্লাহ এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রেহানা পারভীনের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে ওই প্রতিরোধক কিট। যেটি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বায়োমেডিক্যাল প্রকৌশল বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে ব্যবহার উপযোগী হিসেবে ছাড়পত্র পেয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্স কাউন্সিলের (বিএমআরসি) চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

করোনা প্রতিরোধী ডিভাইস তৈরি প্রজেক্টের প্রধান পরিদর্শক (পিআই) ডা. এইচ এম মাসুম বিল্লাহ বলেন, ডিভাইস তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। গত ১২ মে আমরা ইথিক্যাল অ্যাপরোভাল এর জন্য বিএমআরসিতে আবেদন করেছি। তারা বুয়েটের ছাড়পত্র চেয়েছেন। যা গত ৬ জুন পেয়ে ৮ জুন বিএমআরসিতে জমা দেওয়া হয়েছে। এবার বিএমআরসির অনুমোদন পেলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হবে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ২০ জন করোনায় আক্রান্ত রোগীর ওপরে এটি নিয়ে কাজ করা হবে। তারপরই এটির প্রসার ঘটনোর লক্ষ্যে কাজ শুরু করা হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে কিছু দাপ্তরিক জটিলতা ও সীমাবদ্ধতার কারণে অনুমোদন পেতে দেরি হচ্ছে। তবে বিএমআরসি সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে খুব শিগগিরই ডিভাইসটির অনুমোদন দেবে বলে আশা করছি।

এ বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রেহানা পারভীন বলেন, মূলত মানুষের নিঃশ্বাস এর মাধ্যমে করোনা ভাইরাস বাতাসে ছড়ায়, যা পরবর্তীতে সুস্থ ব্যক্তিকে আক্রান্ত করে। করোনা প্রতিরোধী এ কিটের মাধ্যমে আক্রান্ত মানুষের নিঃশ্বাস থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড পুরোপুরি করোনা ভাইরাসমুক্ত হয়ে পরিবেশে যাবে। কারণ এটিতে ভেন্টিলেটরের মাস্কের মতো একটি অংশ রয়েছে। যেটি নিঃশ্বাস থেকে নির্গত করোনা ভাইরাসকে মূল ডিভাইসে নিয়ে গিয়ে জীবাণুমুক্ত করবে। শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. এইচ এম মাসুম বিল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, এটি মূলত বর্তমান সময়ে মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাতাসের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এ কিট যুগান্তকারী কাজ করবে।

তিনি বলেন, এটি বহনযোগ্য আর তাই কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হন এবং উপসর্গ না থাকে তাহলে সেও তার দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। যেমন গার্মেন্টসের কোনো এক কর্মী করোনায় আক্রান্ত। কিন্তু তার কোনো উপসর্গ নেই, শারীরিকভাবে সুস্থও রয়েছেন। তিনি যদি এটি ব্যবহার করেন তাহলে তার নিঃশ্বাস থেকে ভাইরাস সংক্রমণের কোনো সুযোগ থাকছে না। কারণ ডিভাইসটি ভাইরাসকে মেরে ফেলবে। আর এ ডিভাইসের সুবিধা হচ্ছে এটি ব্যবহারের ফলে তার দ্বারা অন্য কেউ সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। আমি বিষয়টি নিয়ে নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছি। এটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে বর্তমান পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি।

আপনার মতামত লিখুন :