পাওনা টাকা চাইলে অস্ত্র দেখাতেন প্রতারক শাহেদ

প্রকাশিত : ১০ জুলাই ২০২০

প্রতারণা, হুমকি আর অস্ত্রের ভয় দেখানো- এমন নানা চাপে রিজেন্ট গ্রুপের কর্ণধার মো. শাহেদ কোণঠাসা রাখতেন বলে অভিযোগ ব্যবসায়িক পার্টনারদের। নিজেকে কখনো প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক এপিএস পরিচয় দেয়া, আবার কখনো রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো ছিলো তার কৌশল। ব্যবসায়িক অংশীজনদের অভিযোগ, রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যানের প্রতারণার নিয়মিত কৌশল ছিল ভুয়া ব্যাংক চেক।

রাজধানীর উত্তরায় হোটেল মিলিনা। কোভিড নাইন্টিন চিকিৎসায় নির্ধারিত বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জায়গা এ হোটেলটিতেও আছে রিজেন্ট গ্রুপের মালিক মো. শাহেদের অংশীদারিত্ব। হোটেল মিলিনার ভবন মালিক ও ব্যবসায়িক অংশীদার জানান, গত বছরের নভেম্বরে চুক্তি হয় মো. শাহেদের সঙ্গে। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে সাড়ে ৭ লাখ টাকা ভাড়া আর মুনাফার ৫৫ শতাংশ দেয়ার কথা মো. শাহেদের। তবে এর সবই থেকে যায় কাগজে-কলমেই। বরং পাওনা চাইতে গিয়ে ও শাহেদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ভবন মালিককে উল্টো পড়তে হয় রোষানলে। অভিযোগ, মামলা আর হুমকি দিয়ে হয়রানি করেন মো. শাহেদ।

মিলিনার মালিক বলেন, বাড়িভাড়া ৯ মাসে হিসাব করলে ৭০ লাখ টাকা। লভ্যাংশ হিসাব করলে কোটি ছাড়িয়ে যায়। সে বলেছে, আমি তার সঙ্গে পারবো না, লড়তে না করেছেন। লড়লে আমি শেষ হয়ে যাব। মো. শাহেদের প্রতারণা আর হুমকির ফাঁদে পড়ার অভিযোগ তার অন্য ব্যবসার অংশীজনদেরও। শাহেদের মালিকানাধীন রিজেন্ট কেসিএস এর পূর্বাচলে লেক খননের কাজে লোকবল আর যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতো খাদেম এন্টারপ্রাইজ। এ প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারীদের অভিযোগ, মো. শাহেদের কাছে পাওনা চাইতে গিয়ে অস্ত্রের মুখে পড়তে হয় তাদের।

খাদেম এন্টারপ্রাইজের মালিক বলেন, আমরা তিনজনই ছিলাম। এরমধ্যে অহেতুক সে তার অস্ত্র বের করে আমাদের দেখায়। বলে বের হয়ে যাও, না হয় কিছু হয়ে যাবে। অংশীজনদের পাওনা টাকা পরিশোধে টালবাহানার অন্যতম কৌশল ছিল চেক নিয়ে প্রতারণা, এমন অভিযোগও রয়েছে শাহেদের বিরুদ্ধে।

এদিকে, এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে শাহেদ। ৬ হাজারের বেশি ভুয়া কোভিড রিপোর্ট তৈরি, নমুনা সংগ্রহে অনিয়ম করে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে এরইমধ্যে রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয় ও হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

 

আপনার মতামত লিখুন :