আমি বিয়ে করতে চাই আর বিয়ে ছাড়া ভাল লাগে না

প্রকাশিত : ১৫ মার্চ ২০২১

আমার মুখের এই কথাটা শুনে মায়ের আগে অনেকেই বেশি রাগান্বিত হলো,আর বললো-নিজ মুখে বিয়ের কথা বলতে লজ্জা করেনা। লেখাপড়া করা অবস্হায় ষাঁড়ের মতো বসে আছিস। আগে কিছু একটা কর। বিয়ে করে বউকে খাওয়াবি কী?এসব কথা শুনেও মা কিছু বলেনি। মা তখন শুধু বোকার মতো আমার মুখের দিক চেয়েছিলো, তার চোখের ইশারাতে বুঝেছিলাম মা-ও চায় বিয়েটা না করি।

আমি বললাম, মা বিয়ের সস্পর্ক যুবক বয়সের সাথে আর ক্যারিয়ার গড়ার জন্য পড়ে রয়েছে আজীবন। আমার যেসব বন্ধুরা ছাত্রজীবনে প্রেম করে বিয়ে করেছে তাদের বউ তো না খেয়ে মারা যায়নি। তাহলে আমার বেলায় এতো আপত্তি কেন?এমন সময় বাবা এসে কষে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দিলো। আমার আর বলার মতো কোন ভাষা রইলো না।আমি যতর জানি বাবা চাকরির আগে বিয়ে করেছিলেন ১৫ বছর বয়সে। দাদা দাদি মূর্খ ছিলো তাই হয়তো বাবা বিয়েটা করতে পেরেছিলেন। কিন্তু আমার বাবা মা মূর্খ নয় তাই

যৌবনকালে বউ পাওয়ার আশা ত্যাগ করাই ভালো। কারণ যৌবন কন্ট্রোল করা যে কতটা কষ্টের তা বাবার আজ মনে নেই। তারা শুধু চাই ছেলের কাঁড়ি কাঁড়ি ইনকাম। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গেলে দেখা যায় বান্ধবীরা দুই ছেলের মা। আমাকে দেখে টিটকারি মেরে বলে কিরে, আর কতকাল দেবদাস হয়ে থাকবি? বয়স তো ফুরিয়ে গেলো।মরিয়ম, আমার প্রতিবেশীর মেয়ে। একদিন সাহস করে তার বাবাকে প্রস্তাব দিয়ে বসলাম। আমার কথা শুনে খালু রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বললেন মেয়ের বাবা কি গাঞ্জা খায় যে বেকার ছেলের সাথে বিয়ে দিবে? লজ্জায় অপমানে সেখান থেকে ফিরে আসলাম। বাড়িতে এসে দেখি রায়হানের বাড়িতে অনেক লোকের সমাগম।

পরে শুনলাম রায়হান বিয়ে করেছে। পারিবারিক ভাবেই বিয়ে হয়েছে। রায়হান আমার চেয়ে সাত বছরের ছোট। তবুও পিতামাতা তার বিয়ে দিয়েছে। কারণ রায়হান ভ্যান চালকের ছেলে, তথাকথিত শিক্ষিত পরিবারের সন্তান নয়। তাই তার বোউ না খেয়ে মরে যাবে না। না খেয়ে মরে শুধু পিতামাতার অনুগত ধনী লোকের বেকার ছেলেদের বোউ। ভাবছি, এতো শিক্ষিত ধনী পরিবারে জন্ম না নিয়ে যদি কোন দিনমজুরের ঘরে জন্ম নিতাম তাহলে যৌবন কালে বোউ পেতাম। আর বিয়ের পর বোউকে খাওয়ানো নিয়েও চিন্তা থাকতো না।

কাউকে বলার আর কিছু রইলো না, বাবা মা নিজেই যখন তার সন্তানের অভিব্যক্তি বুঝলো না,তখন তার কাউকে বোঝানোর কিছুই থাকে না, দাঁতে দাঁত চেপে শুধু চোখের পানি ফেলছিলাম,দিন রাত এক করে জব সলুউশোনে পড়ছি সেগুলোকে বুকে নিয়ে খুব কাঁদছি। শুধু পুরুষ বলে আজ আমি অবহেলিত । আমার যুবক বয়সের সমস্যাটা কেউ বুঝে না। সবাই শুধু আমাকে বলে চাকরি চাই, চাকরি। মনে মনে খুব মিস করছি ইসলামি সমাজটাকে। আজ যদি ইসলামি সমাজ থাকতো তাহলে আমাকে এমন যুবক বয়সের সমস্যায় পড়তে হতো না।এরপরও শুনতে হয় আমাদের সমাজটা পুরুষ শাষিত আর এই সমাজে নারীরা নির্যাতিত।

 

আপনার মতামত লিখুন :