চট্টগ্রাম বন্দরে চীনা জাহাজের ৭ নাবিক করোনাক্রান্ত, পণ্য খালাস বন্ধ

প্রকাশিত : ২৪ আগস্ট ২০২১

চট্টগ্রাম বন্দরে আসা একটি বিদেশি জাহাজের ৭ নাবিকের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জাহাজটি থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রাখার পাশাপাশি জাহাজের সব নাবিককে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। রবিবার রাতে এদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেয়েছে বন্দর স্বাস্থ্য বিভাগ। নাবিকদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাহাজটির শিপিং এজেন্টের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, বাহামাস পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি সেরেন জুনিপার চীন থেকে ডিএপি (ডায়ামোনিয়াম ফসফেট) সারের চালান নিয়ে গত ১২ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আসে। এরপর যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পণ্য খালাস শুরু করে। গত ২১ আগস্ট জাহাজটির ক্যাপ্টেন স্থানীয় শিপিং এজেন্টের কাছে পাঠানো এক মেইল বার্তার মাধ্যমে জাহাজের ৭ জন নাবিকের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়ার কথা জানায়।

বিষয়টি শিপিং এজেন্ট বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে বন্দরের স্বাস্থ্য বিভাগ পণ্য খালাস বন্ধ রাখা ও নাবিকদের সম্পূর্ণ কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশনা দেয়। এরপর থেকে ওই জাহাজের পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে যায়। চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ জাবেদ দেশ রূপান্তরকে জানান, শনিবার বন্দরের নিজস্ব স্বাস্থ্যকর্মীরা বহির্নোঙরে অবস্থানরত এমভি সেরেন জুনিপার জাহাজে গিয়ে সেখানে থাকা ২১ জন নাবিকের নমুনা সংগ্রহ করে। এরপর নমুনাগুলো কভিড পরীক্ষার জন্য আরটিপিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়।

রবিবার রাতে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আমাদের হাতে আসে। এতে দেখা যায়, ৭ জন নাবিকের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ এসেছে। বাকি ১৪ জনের ফল নেগেটিভ আসে। এ অবস্থায় জাহাজটির সব নাবিককে কোয়ারেন্টাইনে রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামে জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট মাল্টিপোর্ট শিপিং লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানান, চীন থেকে ৪৬ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন ডিএপি সারের চালান নিয়ে সিঙ্গাপুর বন্দর হয়ে চট্টগ্রাম আসে বাহামাস পতাকাবাহী জাহাজ এমভি সেরেন জুনিপার। চালানের একটি অংশ চট্টগ্রামে এবং অপর অংশ মোংলায় খালাস হওয়ার কথা। চট্টগ্রামের অংশ ইতিমধ্যে খালাস হয়ে গেছে।

শিপিং এজেন্ট মাল্টিপোর্ট শিপিং লিমিটেড এর পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, জাহাজটিতে আসা পণ্যের যে অংশ চট্টগ্রামে খালাস হওয়ার কথা ছিল তা খালাস হয়ে গেছে। যা বাকি রয়েছে সেগুলো মোংলা বন্দরে খালাস হওয়ার কথা। বন্দরের নির্দেশনা অনুসারে নাবিকদের কোয়ারেন্টাইন শেষ হলে তা মোংলায় খালাস করা হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, করোনা পরিস্থিতিতেও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির অবস্থা বিবেচনায় রেখে বন্দরের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়। তবে করোনা সংক্রমণ রোধে বন্দরে আগত জাহাজের নাবিকদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি পালনসহ অন্যান্য নির্দেশনা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতালে করোনা চিকিৎসারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :