গায়ক আকবরের শারীরিক অবস্থার অবনতি

কিডনি, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত গায়ক আকবরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তিনি গেল দুই সপ্তাহ থেকে ঠিকমতো খেতেও পারছেন না। এমনকি কথা বলতেও পারছেন না। অর্থ অভাবে তিনি চিকিৎসা নিতে পারছেন চেয়ে আছেন সরকারি হাসপাতালের দিকে। এমন অবস্থায় মানুষের কাছে হাত পেতেছেন তিনি। এদিকে গেল বছর প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রটা ভাঙতে পারলে তার চিকিৎসা করতে পারবেন বলে জানান আকবরের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা।

ঢাকার মিরপুরে হারম্যান মাইনর স্কুলের পাশে পরিবার নিয়ে থাকেন আকবর। ঈদের দিন থেকে তিনি অসুস্থ। পরেদিন থেকে কোমর থেকে শরীরের নিচ পর্যন্ত অবশ হয়ে আছে এই গায়কের। আকবরের অসুস্থতার বিষয়ে তার স্ত্রী কানিজ বলেন, ‘অবস্থা মোটেও ভালো না। যত সময় যাচ্ছে, অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আকবরের শরীর অবশ হয়ে গেছে, বিছানা থেকে উঠতে পারছে না। খাওয়াদাওয়া বন্ধ দুই সপ্তাহ ধরে। শরীরে ঘা হয়েছে। এমন অবস্থায় তাকে পিজি হাসপাতালে নিতেও পারছি না। প্রাইভেট হাসপাতালে নেওয়ার সামর্থ্যও তো নেই। তাই বাসাতেই আছে।’

কানিজ ফাতেমা বললেন, ‘মানুষের কাছ থেকে আর কত নেব। হাত পাততে ভালো লাগে না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ২০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। আমরা চাইছি সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া টাকা একসঙ্গে পেলে ভালোমতো চিকিৎসা করাতে পারব বলে মনে করছি। গেল বছর গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আকবর। তার অসুস্থতার খবর পৌঁছে যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। এরপর তার পরিবারকে ডেকে ২০ লাখ টাকা অনুদান দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই টাকার মুনাফা হিসেবে তিন মাস পর পর ৪৯ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে তোলেন আকবর। গেল ৮ বছর থেকে ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন আকবর। তিন বছর হলো তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে জন্ডিস, রক্তে প্রদাহসহ নানা রোগ।

প্রসঙ্গত, উপমহাদেশের প্রখ্যাত গায়ক কিশোর কুমারের গাওয়া ‘একদিন পাখি উড়ে’ নতুন করে গেয়েছিলেন আকবর আলী। এরপর হানিফ সংকেতের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে এই গান তাকে আলোচনায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তার গাওয়া ‘তোমার হাতপাখার বাতাসে’ গানটি দেশ-বিদেশের দর্শক-শ্রোতার কাছে তার ব্যাপক পরিচিতি পাইয়ে দেয়।

আকবরের পুরো নাম আকবর আলী গাজী। তিনি শ্রোতাদের মাঝে পরিচত আকবর নামেই। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। গান শেখা হয়নি। তবে আকবরের ভরাট কণ্ঠের কদর ছিল যশোর শহরে। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের এক ব্যক্তি আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হন। তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ‘ইত্যাদি’ কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছর ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে’ গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান আকবর। গায়ক হিসেবে পরিচয় পাওয়ার আগে তিনি যশোরে রিকশা চালাতেন।