আত্মীয়ের মাঝে বৈবাহিক সম্পর্কে চট্টগ্রামে কলোডিয়ান শিশুর জন্ম (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর ২০২০

চট্টগ্রামে বিরল বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্ম নিয়েছে এক শিশু। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে ‘কলোডিয়ান বেবি’ বলা হয়। গত শনিবার (২১ নভেম্বর) রাতে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৩৮ সপ্তাহে জন্ম নেয়া শিশুটির সারাদেহ প্লাস্টিকের মতো দেখতে মোটা সাদা চামড়া দিয়ে মোড়ানো। চোখের পাতা বাইরের দিকে ওল্টোনো।

জন্মের পর থেকেই শ্বাসক’ষ্ট, পানিশুন্যতাসহ ত্বকের বিভিন্ন সং’ক্রমণে ভুগছে। শিশুটিকে এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, জিনগত ত্রু’টির কারণে বিশেষ ধরনের চর্মরোগ নিয়ে এই শিশুরা জন্মগ্রহণ করে। নিকট আত্মীয় দম্পতিদের এমন সন্তান জন্ম দেয়ার হার বেশি। উন্নত এবং দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসায় ১৫ শতাংশ ‘কলোডিয়ান বেবি’ বেঁচে থাকতে পারে।

বিশ্বব্যাপী জন্ম নেয়া কলোডিয়ান শিশুর সংখ্যা মাত্র ২৭০ জন। হারলেকুইন ইকথায়োসিস নামে এক ধরনের চর্মরোগ নিয়ে কয়েক লাখে একজন শিশু জন্মগ্রহণ করে। জানতে চাইলে চট্টগ্রামের মেমন হাসপাতালের স্ত্রী রোগ চিকিৎসক ও সার্জন ইশরাত জাহান বলেন, সিজার হওয়ার পর দেখা গেল যে এটি একটি বিরল প্রজাতির শিশু। আমার চিকিৎসা জীবনে এমন শিশু আগে কখনো দেখিনি। জানা গেছে, কলোডিয়ান শিশু’র জন্ম দেয়া ওই দম্পতি সম্পর্কে খালাত ভাই-বোন। চিকিৎসকরা বলছেন, নিকটাত্মীয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমন জিনগত ত্রু’টিপূর্ণ শিশুর জন্ম হয়।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউনেটোলজী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জগদীশ চন্দ্র দাশ বলেন, নিকট আত্মীয়কে যদি আমরা বিবাহ না করি, তাহলে জন্মগত অনেক সমস্যাই আমরা এড়িয়ে চলতে পারি। দীর্ঘমেয়াদী আধুনিক চিকিৎসায় কলোডিয়ান শিশুদের বেঁচে থাকার হার বাড়ছে বলে জানান চিকিৎসকরা। তবে এই শিশুরা অতিমাত্রায় সেনসিটিভ হওয়ায় সব সময় ডেথরিস্কে থাকে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিশু বিশেষজ্ঞ ও উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাসির উদ্দীন মাহমুদ বলেন, জন্মের পর ৩ সপ্তাহ পরে আস্তে আস্তে চামড়া চলে যায়। তারপর চর্মের অন্যান্য অসুখের চিকিৎসা চালাই। এক সময় এই ধরনের বাচ্চারা বাঁচত না। তবে এখন আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার ফলে বেঁচে থাকছে, তবে সারাজীবনই এদের চিকিৎসা নিতে হয়। জন্মগত ত্রু’টি এড়াতে নিকটাত্মী দের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ককে নিরুৎসাহিত করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত লিখুন :