মাসব্যাপি মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচি পালিত

প্রকাশিত : ১ জানুয়ারি ২০২১

আজ ৩১ শে ডিসেম্বর ২০২০ইং, বৃহস্পতিবার সকাল ১০ ঘটিকায় বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে মাসব্যাপি মহান বিজয় দিবসের সমাপনী কর্মসূচি সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় “একমাত্র বাঙালি জাতিসত্তায় পারে স্বাধীনতাকে সুসংহত করতে”-শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ পরিচালনা কমিটির সদস্য মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, বঙ্গবন্ধু পরিষদ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিষ্টার ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল-মামুন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ পরিচালনা কমিটির সদস্য আব্দুল মতিন ভূইয়া, জগন্নাথ বিশ্ব বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী, বঙ্গবন্ধু পরিষদ পরিচালনা কমিটির সদস্য ডঃ লিয়াকত হোসেন মোড়ল, খন্দকার নজরুল ইসলাম, এ্যাড. আব্দুস সালাম পিপি, এস এম লুৎফর রহমান, রেহান সোবাহান, অজিত কুমার সরকার, প্রকৌশলী মাইনুর রহমান, মতিউর রহমান লাল্টু প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধু পরিষদ পরিচালনা কমিটির সদস্য মতিউর রহমান লাল্টুর সঞ্চালনায় সভাপতির বক্তব্যে ডা. এস এ মালেক বলেন, বাঙালি জাতিসত্তা দুর্বল হলে আমাদের স্বাধীনতার ভীতও দূর্বল কারণ বাঙালির স্বাধীনতা এসেছে সকল ধর্মের মানুষের আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে। দেশ স্বাধীন হয়েছে একক কোন ধর্মের মানুষের নেতৃত্বে নয়। স্বাধীনতার ৫০ বছর যখন আমরা উদ্যাপন করতে যাচ্ছি, সেই সময়ে আবার মৌলবাদের থাবা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর আঘাত হেনেছে। তারা স্বাধীনতা, সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিশ্বাস করে না। অবশ্যই বাঙালি জাতীয়তাবাদি চেতনার বিকাশ ঘটানোর মাধ্যেমেই বঙ্গবন্ধু বাঙালির জন্য স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে ছিলেন। বার বার এই স্বাধীনদেশে মৌলবাদি গোষ্ঠি ও স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা আমাদের রাষ্ট্রের মূল চেতনার উপর আক্রমণ করেছে। এই অপশক্তি জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে এদেশে আবার সাম্প্রদায়িক রাজনীতি শুরু করে। এরাই আবার বাংলার মানুষের বাতি ঘর আমাদের আস্থার ঠিকানা, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার মাধ্যেমে তাদের শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে চাই। তারা এদেশে মৌলবাদি শাসন কায়েম করতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল শক্তিকে ঐক্য বদ্ধ হয়ে এই মৌলবাদি গোষ্টির বিষ দাঁত ভেঙ্গে দিতে হবে। তাদের আস্ফালনে জাতির পিতার ভাস্কর্য অবমাননা করা হয়েছে।

যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ। সময় এসেছে, এই সকল সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দেওয়ার। তিনি আরো বালেন, বঙ্গবন্ধু দুঃখী মানুষের মুখে হাঁসি ফোটানোর জন্য দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি দিয়ে ছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি একটি শোষণহীন, বৈষম্যহীন, ন্যায় ও সমতা ভিত্তিক একটি আদর্শ রাষ্ট্র গড়তে চেয়ে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের পরিবর্তনশীল আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে সঠিক পথেই দেশ কে পরিচালিত করছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়িত হলেই কেবল স্বাধীনতার সুফল প্রত্যেক ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম বলেন, বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। বঙ্গবন্ধু আছেন, থাকবেন চিরদিন। কেউ তাঁর আদর্শকে ধ্বংস করতে পারবে না। ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হলেই কেবল আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত হবে। ডঃ লিয়াকত হোসেন মোড়ল বলেন, বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে শোষণহীন একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। অব্দুল মতিন ভূঁইয়া বলেন, ভাষা আন্দলোনের মাধ্যমে আমাদের যে, বাঙালি জাতীয়তাবাদি চেতনার সৃষ্টি হয়, সেই পথ ধরেই এসেছে আমাদের কাঙ্খিত স্বাধীনতা। ডঃ অরুণ কুমার গোস্বামী বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদী মহান নেতা ছিলেন বলেই বাঙালির কাঙ্খিত স্বাধীনতা এসেছে মাত্র ৯মাসের সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে।

এ্যাড. আব্দুস সালাম পিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন ছিল, বাঙালি স্বাধীন হবে, উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তাঁর সেই স্বপ্ন আজ সত্যিকারভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে । অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাত্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য মোঃ নাছির উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ বাংলাদেশ ব্যাংক শাখার সভাপতি মোঃ নেছার আহাম্মদ ভূঁঞা, বেসিক ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি, ডঃ শংকর তালুকদার, বিডিবিএল ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদ সাধারণ সম্পাদক মোঃ নূর উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ হোমিও প্যাথিক বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি ডা. সাখাওয়াত ইসলাম খোকন, আবহাওয়া অধিদপ্তর বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি হাবিবুর রহমান, জাতীয় স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত কাজল দত্ত, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর সাবেক সহ সভাপতি এইচ এম মেহেদী হাসান, কলাবাগান বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি এস এম ওয়াহিদুজ্জামান (মিন্টু)সহ বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয়, মহানগর এবং বিভিন্ন থানা কমিটির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর অন্যতম সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. এস এ মালেক। সভার শুরুতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সকল শহিদের, ১৫ আগস্ট জাতির পিতাসহ সকল শহিদ এবং এপর্যন্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের আত্মার শান্তি কামনায় ১মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সভায় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাবেক সভাপতি, দেশের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী বিচারপতি কে এম সোবহান এর মুত্যু বার্ষিকীতে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ বাংলাদেশ ব্যাংক শাখার সভাপতি মোঃ নেছার আহাম্মদ ভূঁঞা।

 

আপনার মতামত লিখুন :