গোলের গুড়ের হাট বসেছে কলাপাড়ায়


প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। গোলের গুড়ের হাট বসেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়। এ গুড়ে কোন ক্ষতি নেই,তাই চাহিদাও রয়েছে অনেক। দেশের বিভিন্ন এলাকার ক্রেতাদের ভিড়ে ব্যাস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীসহ গুড় তৈরির কারিগররা। পৌর শহরের লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় প্রায় শতাধিক চাষিরা প্রতি মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাটে সারিবদ্ধভাবে বসে এ গুড় বিক্রি করছেন। তবে তিন প্রকারের গুড়ের দামও তিন ধরনের। গোল চাষিদের তৈরী করা গুড় বড় কোন প্লাস্টিকের বালতি, সিলভারের পাতিল,কলসে কিংবা মাটির হাড়িতে নিয়ে আসেন এ হাটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গেল গাছের ডগা থেকে বেড়িয়ে আসা সু-স্বাধু রস বছরের অগ্রহায়ণ থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত সংগ্রহ করে কৃষকরা। আর তা দিয়ে তৈরি করা গুড় এ হাটে বিক্রি করেন। উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর, চাঁদপাড়া, ইসলামপুর, রজপাড়া, নাওভাঙ্গা ও মিঠাগঞ্জ গ্রামে ব্যাপক গোল গাছ রয়েছে। এ গাছের পরিচর্যা করতে হয়না। তাছাড়া রোগ বালাইও নেই। তাই চাষিদের খরচও কম। বছরের চার মাস গোলের গুড় বিক্রি করে গোল গাছ চাষিরা বাড়তি আয় করে থাকেন। এলাকার সকল গোল গাছের বাগান প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

স্থানীয় চাষিরা জানান, সাধারণত লোনা পানির খালে কিংবা বিলে এ গাছ ভাল জন্মায়। তিন ধরনের গুড়ের মধ্যে শক্ত গুড়কে রোয়া গুড় বলে। এছাড়া পাতলা ও ঝড়া গুড়। শীত মৌসুমে এ গুড় তৈরি হয় বিধায় এলাকার মানুষ অন্য মৌসুমের জন্য মজুদ করে রাখেন। গোলের গুড়ে কোন ক্ষতি নেই এমন অভিমত স্থানীয় গোল চাষিদের।

উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের গোল চাষি শান্তি রঞ্জন সরকার বলেন, প্রতি বছর অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত দিনে দু’বার মাটির হাঁড়ি পেতে রস সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত রস বাড়ির আঙিনায় অধিক তাপে ফুটিয়ে গুড় তৈরি করা হয়। এর পর মাটির হাঁড়িতেই এসব সংরক্ষণ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। অতি মিষ্টি এ গুঁড়ের পরিচিতি এক সময় এলাকায় থাকলেও বর্তমানে এটি বেশ বাণিজ্যিক প্রসারতা লাভ করেছে। চাহিদার তুলনায় কম হলেও বিভিন্ন হাটে-বাজারে এ গুড় পাওয়া যাচ্ছে।

একই গ্রামে গোলগাছ চাষি নিঠুর হাওলাদার বলেন, এখন বাজারে গিয়ে গুড় বিক্রি করতে হয় না। একশ্রেণির খুচরা বিক্রেতারা বাড়ি এসেই গুড় নিয়ে যায়। প্রতিকেজি গুড় ১০০ ও ১২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। গুড় ক্রেতা মো. শামিম আহম্মেদ বলেন, অন্যান্য গুড়ের চেয়ে আলাদা স্বাদযুক্ত, সাশ্রয়ী হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষিত থাকে বলে গোলের গুড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

বন বিভাগের কলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম বলেন,পরীক্ষামূলকভাবে বেশ কয়েকটি স্থানে গোলগাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। এতে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি। এ গাছগুলো উপকূলীয় এলাকার প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

 

আপনার মতামত লিখুন :

এই বিভাগের সর্বশেষ