ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় হেলেনা জাহাঙ্গীর আট দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত : ৩ আগস্ট ২০২১

রাজধানীর পল্লাবী থানায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে ও প্রতারণার মামলায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় রিমান্ড শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর পল্লবী থানার দুই মামলায় শুনানি শেষে আদালত তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে, গত ৩১ জুলাই পল্লবী থানায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন আইনের মামলায় তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। এছাড়া মঙ্গলবার প্রতারণার মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন আইনের মামলার রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীর দীর্ঘদিন যাবত সরকারি অনুমোদন ছাড়া, সংশ্লিষ্ট বৈধ কাগজপত্র ব্যতীত জয়যাত্রা টিভি সম্প্রচারসহ প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে পরিচালনা করে আসছে। এমতাবস্থায় মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও জয়যাত্রা টিভি সম্প্রচারসহ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার কাজে ব্যবহৃত আরো অবৈধভাবে পরিচালনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের লক্ষ্যে আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীরের সাত দিনের রিমান্ড পাওয়া একান্ত প্রয়োজন। এদিকে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য আগামী ২৬ সেপ্টম্বর দিন ধার্য করেন আদালত। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন আইনে র‌্যাব বাদী হয়ে মামলাটি করেন। গতকাল আবদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি প্রতারণার অভিযোগে পল্লবী থানায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার এজাহারে আবদুর রহমান দাবি করেন, হেলেনা জাহাঙ্গীর তার মালিকানাধীন ‘জয়যাত্রা টেলিভিশনে’ ভোলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়ার নামে ৫৪ হাজার টাকা নিয়েছেন। তিনি জয়যাত্রা টেলিভিশনে কয়েক মাস কাজ করেছেন। প্রতি মাসে তার কাছ থেকে তিন হাজার টাকা করে নিত ‘জয়যাত্রা টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ’। এদিকে গত ২৯ জুলাই রাত ৮টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের বাসভবনে অভিযান শুরু করে র‍্যাব। এরপর দীর্ঘ চার ঘন্টা ধরে অভিযান চালানো হয়। আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এরপর শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব। এসময় গুলশান থানায় র‍্যাব-১ এর সিপিসি মো. মজিবুর রহমান বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। এরপর গত ৩০ জুলাই আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীরকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। পরে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ শাহানুর রহমান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

জানা গেছে, হেলেনা জাহাঙ্গীর অপকৌশলের মাধ্যমে নিজেকে ‘মাদার তেরেসা’, ‘পল্লী মাতা’ ও ‘প্রবাসী মাতা’ হিসেবে পরিচিতি পেতে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। তার পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘবদ্ধ চক্রটি এসব ভূয়া খেতাবের অপপ্রচার চালাত। বিভিন্ন দেশি সংস্থা ও ব্যক্তি থেকে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের নামে অর্থ সংগ্রহ করতেন। যা মানবিক সহায়তায় ব্যবহারের চেয়ে হেলেনার খেতাব প্রচার প্রচারণায় বেশি ব্যবহার করা হতো। এছাড়া তিনি অস্ট্রিয়া প্রবাসী আলোচিত সেফুদাকে নাতি ডাকতেন। তার সঙ্গে সেফুদার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।

আপনার মতামত লিখুন :