তামাকদ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন লঙ্ঘন করে বিক্রয়স্থানে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন

প্রকাশিত : ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ভয়েসেস ফর ইন্টারেক্টিভ চয়েস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট (ভয়েস) বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের নীতিনির্ধারকদের ‘ঢাকা শহরের বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক পণ্যের বিজ্ঞাপন, প্রচার এবং স্পনসর্শিপের মাধ্যমে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে। আর্থসামাজিক এলাকা ভেদে বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকের বিজ্ঞাপন, প্রচার ও স্পন্সরশীপের মাধ্যমে তামাক শিল্প যেসব হস্তক্ষেপ ও পন্থা অবলম্বন করে এবং কিভাবে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন (২০০৫) লংঘন করে তার কৌশলগুলো অনুসন্ধানের উপর এই গবেষণায় দৃষ্টি দেয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের (এনটিসিসি) প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম, এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের মহাপরিচালক, ড. শাহাদাত হোসেন মাহমুদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিড়স (সিটিএফকে)-এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য) নিলুফার নাজনীন, যুগ্মসচিব (জনস্বাস্থ্য) এসএম আলম এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব সাদেকুল ইসলাম এবং উপসচিব খন্দকার জাকির হোসেন। আরো ছিলেন সিটিএফকের সিনিয়র পলিসি এডভাইজর আতাউর রহমান মাসুদ, গ্রান্টস ম্যানেজার আব্দুস সালাম মিয়া এবং কমুনিকেশন ম্যানেজার সরকার শামস বিন শরীফ।

ভয়েসের প্রকল্প সমন্বয়কারী জায়েদ সিদ্দিকী গবেষণার মূল ফলাফলগুলি উপস্থাপন করেন। এফসিটিসি স্বাক্ষরকারী এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন আছে এমন দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এফসিটিসি গাইডলাইনের ৫.৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তামাক কোম্পানি কর্তৃক কোনোভাবেই তামাক নিয়ন্ত্রণের উপর কোনোরকম হস্তক্ষেপ না করার জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা প্রদান করে। কিন্তু এই গাইডলাইন বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার জন্য এবং তামাক আইনে হস্তক্ষেপ করার জন্য তামাক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন কৌশলগত পদ্ধতি অবলম্বন করে কাজ করে থাকে। অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম আশ্বস্ত করেছেন যে আমরা ইতিমধ্যে তামাক আইন শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছি এবং তিনি এ বিষয়ে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সমর্থন এবং সমন্বয় প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন।

স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের মহাপরিচালক, ড. শাহাদাত হোসেন মাহমুদ বলেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি আছে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার। তিনি তামাক নিয়ন্ত্রণে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। সিটিএফকের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোস্তাফিজুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন যে, যদিও আইনে বিজ্ঞাপন এবং স্পন্সরশিপ অবৈধ কিন্তু এর প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে না। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে বিশেষভাবে বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হলে এই ধরনের আইন লঙ্ঘন কমবে বলে তিনি মনে করেন।

ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন যে, গবেষনার প্রাপ্ত ফলাফল তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ নিয়ন্ত্রণে আরও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের প্রোগ্রাম অফিসার ডা. ফরহাদুর রেজা এবং আমিনুল ইসলাম সুজন প্রমুখ।

আপনার মতামত লিখুন :