চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক পেলেন মীর মোহাম্মদ আলী

প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) দ্বিতীয় সমাবর্তনে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক (রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক) পেলেন মীর মোহাম্মদ আলী। মীর মোহাম্মদ আলী বর্তমানে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, একোয়াকালচার এন্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি খুব আড্ডা প্রিয় এবং ভ্রমণ বিলাসী মানুষ। জীবনের উপার্জনের সিংহভাগ দিয়ে পৃথিবী ঘুরতে চান। পড়াশোনায় খুব একটা বেশী সময় না দিলেও ক্লাসের গভীর মনোযোগ তাকে এনে দিয়েছে সকল সফলতা। গলাচিপায় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

মীর মোহাম্মদ আলী খুলনা জেলার খানজাহান আলী থানার মীর তৈয়ব জংয়ের ছেলে। তিনি বাবা মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড়। বাবা-মা চেয়েছিল ডাক্তার বানাতে। কিন্তু নিজের ইচ্ছেটা ছিল একটু ভিন্ন। তাইতো নতুন করে নিজেকে গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। সবাইকে দেখিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, ডাক্তারি না পড়েও সেরা হওয়া যায়। স্কুল জীবনে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ থেকে প্রথম স্থান পেয়ে ২০১৩ সালে স্নাতক ও ২০১৫ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় তিনি তার অনুষদ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ নিয়ে প্রথম হন। তারই কৃতিত্ব স্বরূপ তিনি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) দ্বিতীয় সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক পেলেন। ইতিপূর্বে ২০১৭ সালের ২২ মার্চ তিনি পেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৩।

এর আগেও তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কৃতিত্বের জন্য স্নাতক পর্যায়ের চারটি লেভেলে ডিন মেরিট লিস্ট অ্যাওয়ার্ড, ইউনিভার্সিটি গ্রান্ড কমিশন বৃত্তি, ন্যাশনাল সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফেলোশিপ পেয়েছেন। এছাড়া তিনি পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির মেধাবৃত্তি, বিভিন্ন ব্যাংক, সরকারি, আধা-সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তি পেয়েছেন। মাধ্যমিক পর্যায়েও তিনি জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন, পড়াশুনার প্রতিটি ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও মানবিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সংগঠনের সাথে কাজ করেছেন।

পড়াশুনা এবং গবেষণায় আগ্রহী মীর মোহাম্মদ স্নাতক পর্যায় থেকেই বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি এবং দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্থা ও প্রফেসরদের সাথে গবেষণার কাজ করেন। বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনাময় মৎস্য সেক্টরের উন্নয়নে তিনি কাজ করতে চান। ইতিমধ্যে তার ৪০ টির মতো গবেষণা প্রবন্ধ দেশি-বিদেশি অনেক নামকরা জার্নালে প্রকাশিত হয়। এছাড়া তার রয়েছে উপকূল অঞ্চলের কাঁকড়া ও কাঁকড়া চাষীদের নিয়ে লেখা গবেষণাধর্মী একটি বই। শিক্ষা জীবনের শেষ দিকে কাজ করেছেন নদী দূষণ এবং এর ফলে সম্ভাব্য মানবদেহের ঝুঁকি নিয়ে এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রকাশ করেছেন বিশ্বমানের জার্নালে।

মীর মোহাম্মদ আলী মনে করেন, জীবনে সফলতার জন্য প্রথমে দরকার একটি ভালো পরিকল্পনা এবং তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা। একটি সুন্দর পরিকল্পনা ও সংকল্পই এনে দিতে পারে জীবনের সফলতা। তিনি আরো জানান, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার আগেও তিনি ওয়ার্ল্ডফিশ নামের একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক ও ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার এসোসিয়েশনের কনস্যালটেন্ট ছিলেন।

 

আপনার মতামত লিখুন :