আজ কোনো ফেল নেই: করোনার ছোবলের মাঝে সাক্ষী হয়ে রইল ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা

প্রকাশিত : ৩০ জানুয়ারি ২০২১

মরণ ভাইরাসের বিষাক্ত ছোবলের মাঝে কালের সাক্ষী হয়ে রইল ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। সরকারি সিদ্ধান্তে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়িয়ে পরীক্ষা না নেওয়ায় সদ্য ঘোষিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলে তাই সবাই শতভাগ পাস করেছে। বিশেষ পদ্ধতির এই মূল্যায়নে জিপিএ-৫ পেয়েছেন দেশের এক লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। তবে জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেও সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের ফলে ৩৯৬ জন শিক্ষার্থী পূর্ণাঙ্গ জিপিএ-৫ পাননি।

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১১টার দিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এইচএসসির ফল ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ দিন একযোগে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়।

ফলাফল অনুযায়ী এবার ঢাকায় ৫৭ হাজার ৯২৬ জন, চট্টগ্রামে ১২ হাজার ১৪৩, যশোরে ১২ হাজার ৮৯২, ময়মনসিংহে ১০ হাজার ৪০ জন, দিনাজপুরে ১৪ হাজার ৮৭১, রাজশাহীতে ২৬ হাজার ৫৬৮, বরিশালে ৫ হাজার ৫৬৮, সিলেটে ৪ হাজার ২৪২ ও কুমিল্লায় ৯ হাজার ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

এ দিকে, এইচএসসিতে এবার সবাই শতভাগ পাস করলেও গতবার পাস করে ৭৩.৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর জিপিএ-৫ পাওয়ার হার গত বছর ৩.৫৪ শতাংশ হলেও এবার হয়েছে ১১.৮৩ শতাংশ। এছাড়া ছাত্রদের মধ্যে এবার ৭৮ হাজার ৪৬৯ জন এবং ছাত্রীদের মধ্যে ৮৩ হাজার ৩৩৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ শিক্ষার্থীর এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনীর মতো এইচএসসি পরীক্ষাও নেওয়া যাচ্ছে না।

এরপর গত ৭ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসির ফলাফলের গড় করে ২০২০ সালের এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হবে। জেএসসি-জেডিসির ফলাফলকে ২৫ এবং এসএসসির ফলকে ৭৫ শতাংশ বিবেচনায় নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষিত হবে।

কিন্তু আইনে পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশের বিধান থাকায় তা সংশোধন করে বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশের বিধান যুক্ত করতে হয়েছে, যা গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদের অনুমোদন পায়।

সংসদে পাস হওয়া তিনটি বিলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সই করার পর সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট-২০২১’ ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’, ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’ গেজেট আকারে জারি কর সরকার। এরপর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রস্তুত, ঘোষণা ও সনদ বিতরণের জন্য শিক্ষা বোর্ডগুলোকে ক্ষমতা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আপনার মতামত লিখুন :