হোমিও চিকিৎসার আড়ালে রেক্টিফাইড স্পিরিটের ব্যবসা, তৎপর প্রশাসন

প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২০

দিনাজপুরের বিরামপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে যখন একে একে দশটা তাজা প্রাণ ঝরে পড়েছে, তখন নড়ে চড়ে বসে উপজেলা প্রশাসন। মাত্র একটি হোমিও ফার্মেসি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪ হাজার ১০৪ বোতল রেক্টিফাইট স্পিরিটের (অ্যালকোহল) বোতল। আটক করা হয়েছে এই হোমিও ফার্মেসির মালিক আসাদ সরকারকে। বৃহস্পতিবার (২৮ মে) বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার নতুন বাজার এলাকায় সরকার হোমিও দোকানে এ অভিযান চালায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

এ সময় ওই চিকিৎসালয় থেকে অবৈধভাবে রাখা ১৯টি কার্টুনে ৪ হাজার ১০৪ বোতল রেক্টিফাইট স্পিরিট (অ্যালকোহল) উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সরকার হোমিও এর সত্ত্বাধিকারী ডা. আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিরামপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এই অভিযান পরিচালনা করেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাজিউল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান ও বিরামপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী মিথুন সরকার।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দিনাজপুর কার্যালয়ের পরিদর্শক লোকমান হোসেন জানান, বিরামপুরে বেশ কিছু হোমিও চিকিৎসালয়ে অবৈধভাবে রেক্টিফাইট স্পিরিট (অ্যালকোহল) বিক্রয় হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সরকার হোমিও চিকিৎসালয়ে একটি বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে। এ সময় ওই চিকিৎসালয় থেকে ১৯টি কার্টুনে ৪ হাজার ১০৪টি রেক্টিফাইট স্পিরিটের বোতল উদ্ধার করা হয়।

বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান জানান, উপজেলায় যুবকরা রেক্টিফাইট স্পিরিট (অ্যালকোহল) খেয়ে নেশায় জড়িয়ে যাচ্ছিল এমন অভিযোগে সেখানে অভিযান চালিয়ে ওই বোতলগুলো জব্দ করা হয়। এছাড়াও উপজেলায় কোন হোমিও চিকিৎসালয়ে নিয়ম বহির্ভুতভাবে কেউ যেন এর অপব্যবহার করতে না পারে সে জন্য সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখা হবে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত উপজেলায় ৬নং মাহমুদপুর গ্রামে বিষাক্ত রেক্টিফাইট স্পিরিট খেয়ে স্বামী-স্ত্রীসহ ১০ জন মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনায় পল্লী হোমিও হল এর সত্ত্বাধিকারী ডা. আব্দুল মান্নানকে আটক করে বেশ কয়েক জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে পুলিশ।

মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- পৌরশহরের ৬নং ওয়ার্ডের মাহমুদপুর এলাকার আনোয়ারুল ইসলামে ছেলে আব্দুল মতিন (২৭), তোজাম্মেল হোসেন এর ছেলে আজিজুল ইসলাম (৩৩) এবং একই এলাকার সুলতান মাহমুদ এর ছেলে মহসিন আলী (৩৮), হঠাৎপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা (৩৫), শহরের ইসলাম পাড়া এলাকায় তাপস কুমার এর ছেলে অমৃত রায় (২৫), মাহমুদপুর এলাকার আব্দুল আজিজ এর ছেলে সোহেল রানা (৩০), আবুল হোসেন এর ছেলে মনোয়ার হোসেন (৪২) এবং আব্দুল খালেক এর ছেলে আব্দুল আলিম (৪০)।

এছাড়াও আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আব্দুর সাত্তার (৩৭), হৃদয় (২১), জার্জেস শাহ (৩৮) এবং শাহিন (৩২)। তারা সবাই পৌরশহরের মামুদপুর এলাকার বাসিন্দা।

 

আপনার মতামত লিখুন :