নরসিংদীতে পৃথক অভিযানে ১৮জন গ্রেপ্তার, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

প্রকাশিত : ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২

নরসিংদীতে ৪টি পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে ২জন ইউপি চেয়ারম্যান ও ৭জন ডাকাতসহ মোট ১৮জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ২টি বিদেশী পিস্তল, ৫রাউন্ড গুলি, ১টি দেশীয় পাইপ গান, ১টি ২নালা বন্দুক, ৬টি কার্তুজ, ১টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি রাম দা, ১টি চাপাতি ও ২টি ছোরা উদ্ধার করা হয় এবং ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ১টি কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সকল আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য জানান নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সোমবার (৩১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার আমদিয়া ইউনিয়নের বেলাটি গ্রামে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সৈয়দুজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযান চালায় মাধবদী থানা পুলিশ। এসময় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে জনৈক সাদিরের মাছের ঘেরের পাশ থেকে ডাকাত শাহ্ আলমসহ ৩জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে। ওইসময় ডাকাত শাহ্ আলমকে ধরতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি চালায় সে। পরে তাকে ঝাপটে ধরলে শাহ্ আলমের হাতে থাকা পিস্তলের বাটের আঘাতে ওসি সৈয়দুজ্জামান মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হন। গ্রেপ্তারকৃতরা ডাকাতরা হলো, শাহ্ আলম, জাহিদুল হাসান টিটু, ও মো. সোহাগ মিয়া। এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশী পিস্তল, ৫রাউন্ড গুলি, ১টি গুলির খোসা, ২টি ছোরা ও ১২৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।

একই দিনে রাত ৮টার দিকে রায়পুরা উপজেলার মির্জারচরে ইউপি চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক অবৈধ অস্ত্র নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে বালুরচরে যাচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় মির্জারচর ও বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে ধারাবাহিক সহিংসতা ও টেঁটা যুদ্ধের মূল হোতা ইউপি চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিকসহ ৪জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেসময় তার কাছ থেকে ১টি ২নালা বন্দুক ও ৪টি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

এদিকে রবিবার (৩০ জানুয়ারি) সদর উপজেলার চরাঞ্চল আলোকবালীতে অভিযান চালিয়ে ইউনিয়নের টেঁটা যুদ্ধের মূল হোতা ইউপি চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন দ্বীপু ও মো. আসাদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে নরসিংদী মডেল থানা পুলিশ। এসময় তাদের ৫জন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আলোকবালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন দ্বীপু আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মো. আসাদুল্লাহ আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ দ্বন্দ্ব ও টেঁটাযুদ্ধ চলে আসছিলো।

গত শনিবার (২৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল মিয়াপাড়া এলাকায় ডাকাতি হবে এমন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাশার নেতৃত্বে পলাশ থানা পুলিশের যৌথ অভিযান চালানো হয়। উক্ত অভিযানে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৪জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী থানাধীন মাটিয়ালকান্দা গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে নূরে আলম (৫০), বেলাব উপজেলার ভাটেরচরের নূরু মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া (৩২), কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর তারাকান্দী পূর্বপাড়ার শফিক মিয়ার ছেলে আলামিন (৩৪) ও নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার বংশীরদিয়ার মনছুর আলীর ছেলে আবু তাহের। এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি দেশীয় পাইপ গান, ১টি চাইনিজ কুড়াল, ২রাউন্ড কার্তুজ, ১টি রাম দা, ১টি চাপাতি ও ৪রাউন্ড কার্তুজের খোসা উদ্ধার করা হয়। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, গ্রেপ্তারকৃত সকলকে যথাযথ আইনী ব্যবস্থার মাধ্যমে নরসিংদীর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :