সন্তানদের আকুতির পরও বাবার মরদেহ দাফনে এগিয়ে আসেনি গ্রামবাসী

প্রকাশিত : ৫ জুন ২০২০

করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাই মরদেহ দাফনে কেউ এগিয়ে আসতে চাননি। ফলে বাড়ির উঠানে দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা পড়েছিল হতভাগা এক বাবার মরদেহ। এমন পরিস্থিতিতে বাবার মরদেহ দাফনে পুলিশ ও প্রশাসনের সাহায্য চাইলেন সন্তানরা। শেষ পর্যন্ত দাফন হলো আবুল কালামের মরদেহ। এমন অমানবিক ঘটনা ঘটে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে।

শুক্রবার (৫ জুন) সকালে হঠাৎ করে হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের বাখরপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল কালাম (৫৫) মারা যান। এরপরই পরিবারের সদস্যরা মরদেহ দাফনে বাড়ি ও আশপাশের লোকজনের সহায়তা চাইলেন। কিন্তু করোনায় মারা গেছে-এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে। এ সময় মরদেহ দাফনে গ্রামের লোকজন তো দূরের কথা। বাড়ির কেউও এগিয়ে আসলেন না। ফলে দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা বাড়ির উঠানে পড়ে থাকে কৃষক আবুল কালামের মরদেহ।

এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা মৃতের পরিবারের সদস্যরা। বড় সন্তান আবু হানিফ বাবার মরদেহ দাফনে পুলিশ ও প্রশাসনের সাহায্য চাইলেন। এ অবস্থায় হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বৈশাখ বড়ুয়া এবং থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রশীদ লাশ দাফনের উদ্যোগ নিলেন। আর তাদের ডাকে ছুটে আসলেন মাওলানা মো. জুবায়ের। শুক্রবার বাদ আছর সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করা হয় আবুল কালামের মরদেহ। আবু হানিফ জানান, তার বাবা গত কয়েকদিন ধরে জন্ডিস রোগে ভুগছিলেন। এরমধ্যে শুক্রবার সকালে হঠাৎ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তার বাবা।

এদিকে হাজীগঞ্জে একই দিন আরও তিনজন করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। অন্যদিকে চাঁদপুর সদরে মাহবুবুল হক পাটোয়ারী (৬০) এবং মতলব দক্ষিণে আব্বাস আলী (৫৫) করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান। এমন পরিস্থিতিতে চাঁদপুরে একদিনে করোনার উপসর্গ নিয়ে ৫ জনের মৃত্যু ঘটে।

চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, চাঁদপুরে এ পর্যন্ত করোনা পজিটিভ নিয়ে মারা গেছেন ২০ জন। আর এ সব মিলিয়ে করোনা পজিটিভ রোগী হচ্ছেন ২৫৮ জন। এছাড়া সরকারি হিসাবের বাইরে আরও ২২ জন মারা গেছেন। যাদের মধ্যে করোনার উপসর্গ ছিল। সূত্র : সময় নিউজ

আপনার মতামত লিখুন :