বাবা-মাকে খুঁজে পেলেন হারিয়ে যাওয়া ছালমা

প্রকাশিত : ২৩ জুলাই ২০২০

আনোয়ার হোসেন আনু, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: চারমাস পর বাবা- মাকে খুজেঁ পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন নিখোঁজ ছালমা বেগম। ত্রিশের কোঠায় বয়স তার। ছালমার আছে দুই মেয়েও এক ছেলে সস্তান। স্বামীর বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালিশরি ইউনিয়নে। স্বামী পেশায় জেলে। স্বামী বাড়ির মানসিক ও শারীরীক নির্যাতনে মানসিক ভারসম্যহীন হয়ে পড়ে ছালমা।

এপ্রিল মাসে বরিশালে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে নিখোঁজ হয়। এমনটাই জানিয়েছেন নিখোঁজ মেয়ের সন্ধান পাওয়া বাবা নাছির হাওলাদার ও মা জুলেখা। নিরুদ্দেশ হওয়া মেয়েকে খুজঁতে থাকা বাবা-মা খবর পায় তার মেয়ে পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের মাইটভাংগা গ্রামের রুহুল মাতুব্বরের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ছুটে আসেন তারা। বুধবার সকালে আশ্রয়দাতা রুহুল মাতুব্বরের বাড়ি থেকে খুঁেজ পাওয়া মেয়েকে নিয়ে গন্তব্যে ফিরেছেন তারা। নিখোঁজ সালমা ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নের গোলকপুর গ্রামের নাছির হাওলাদারের বড় মেয়ে।

ছালমার মা জুলেখা বেগম জানিয়েছেন, গত চার মাস আগে অসুস্থ মেয়েকে ডাক্তার দেখানোর জন্য ভোলা থেকে বরিশাল নেয়া হয়েছিল। বাড়ি ফেরার পথে বরিশালের নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে মেয়েটি হারিয়ে যায়। তখন থেকেই আত্মীয়-স্বজনসহ সম্ভাব্য জায়গাগুলোতে খুজঁতে থাকেন। তিনি আরও বলেন, ছালমা এমন সংবাদ মোবাইলে পাই। পরে মঙ্গলবার রাতে রুহুল মাতুব্বরের বাড়িতে এসে রাত্রিযাপন করি। বুধবার সকালে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যাই। ছালমার আশ্রয়দাতা রুহুল মাতুব্বর জানান, অনেকটা অসচেতন, রোগাক্রান্ত অবস্থায় পাগল ভেবেই বাড়িতে আশ্রয় দেয়া হয়। কথা বলতে না পাড়া মেয়েটিকে তার স্ত্রী মাতৃস্মেহে সেবা করতে থাকে। কিছুটা সুস্থ হলে নাম ঠিকানা বলতে শুরু করে। বিষয়টি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানালে তারা মেয়ের বাবার সাথে যোগাযোগ করেন। বুধবার সকালে ছালমা তার বাবা-মায়ের সাথে বাড়িতে চলে গেছেন।

ছালমার বাবা নাছির বলেন, আশ্রায়দাতা রুহুল মাতুব্বরের মোবাইল ফোনে মেয়ের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হই। তিন সন্তানের জননী ছালমা শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের মানষিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারসাম্যহীন হয়ে পরে। এ বিষয়ে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, ছালমার আশ্রয়দাতা রহুল মাতুব্বর বিষয়টি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের অবহিত করেন। পরে মেয়েটির সাথে কথা বলে তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বাবা-মাকে খবর দেয়া হয়। বুধবার সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মনিরুজ্জামান জানান, নিখোঁজ মেয়েটি তার পরিবারের লোকজনকে খুঁজে পেয়েছে এমনটা তিনি শুনেছেন।

 

আপনার মতামত লিখুন :