প্রতিবন্ধী তামান্নার কথা: প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়েই চলছে তার সংসার

প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর ২০২০

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : “প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়, তারাও মানুষ, তাদেরও সমাজে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে” এরকমই একজন বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী তামান্না জাহানের কথা বলবো আজ। তার রং তুলিতে রয়েছে যাদুর ছোঁয়া, রয়েছে সূচিকর্মেও বেশ অভিজ্ঞতা। বঙ্গবন্ধুর ভাষণসহ বিভিন্ন ছবি এঁকে তাতে যেন জীবন্তরূপ দান করেছে। শুধু তাই নয় হাতের তুলির ছোঁয়ায় বিভিন্ন মনোমুদ্ধকর দৃশ্য এঁকে চলছে। তামান্না জানেনা তার ভবিষ্যৎ কোথায় ! প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়েই চলছে তাদের সংসার।

প্রতিবন্ধী তামান্না জাহানের বাড়ি বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামের হতদরিদ্র পিতা ওবায়দুল কবির বিশ্বাস ও মা আফরোজা বেগমের একমাত্র সন্তান। তামান্না জাহান বয়স তার ২০ এর কোঁঠায়।

প্রতিবন্ধী তামান্নার মা আফরোজা বেগম বলেন, ছোট বেলাতেই ভয়াবহ এক অসুখে তামান্না বাক ও শ্রবণ শক্তি হারিয়ে ফেলে। আমাদের একমাত্র সন্তান নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করতে গিয়ে শেষসম্বল ভিটেমাটিও বিক্রি করে ফেলেছি। তামান্নার পিতা বর্তমানে অসুস্থ হয়ে সম্পূর্ণ কর্মক্ষমতা হারিয়েছে। আমি সন্তানের চিন্তায় বিভিন্ন অফিস ও মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমাদের মৃত্যুর পরে প্রতিবন্ধী এই সন্তান তামান্না জাহান যেন সমাজের বোঝা না হয়। তামান্না ছোটবেলা থেকেই একা একা তার নিজের চেষ্টায় চিত্রকর্ম ও সূচিশিল্পে পারদর্শী হয়ে ওঠে। সে কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাগ্রহণ না করতে পারলেও বঙ্গবন্ধুর ভাষণসহ বিভিন্ন ছবি এঁকে তাতে যেন জীবন্তরূপ দান করেছে। শুধু তাই নয় হাতের তুলির ছোঁয়ায় সে বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এঁকে চলেছে। সে ছবি এঁকে অনেক আনন্দ পায়। তামান্নার ভবিষ্যৎ কোথায় আমরা জানিনা। তার সামান্য প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়েই চলছে আমাদের সংসার।

প্রতিবন্ধী তামান্নার মা আফরোজা বেগম সাংবাদিকদের আরও জানান, গরীবের সংসারে যেন কোন প্রতিবন্ধী সন্তান জন্ম না নেয়। সন্তানকে কোথাও এতটুকু মাথা গোঁজার ঠাঁই, চাকুরী বা বিবাহ দিতে পারলেই শান্তিতে মরতে পারতাম। প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকার অনেক কিছু করেছে শুনেছি। কিন্তু আমার এই মেয়েটার জন্য সামান্য প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া আর কিছুই পেলাম না।

এই অনন্য মেধাবী প্রতিবন্ধী তামান্না জাহান সরকারী সহায়তা পেলে সমাজে বোঝা না হয়ে ছবি এঁকে স্বাবলম্বী হতে পারে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সহায়ক দপ্তরের মাধ্যমে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছে প্রতিবন্ধী তামান্নার পরিবার।

আপনার মতামত লিখুন :