কুষ্টিয়ায় গ্রামের বাড়িতে রাজধানীর স্কুলছাত্রী আনুশকার দাফন

কুষ্টিয়ায় গ্রামের বাড়িতে দাদা-দাদির কবরের পাশে শায়িত হলেন রাজধানীর কলাবাগানে বন্ধুর বাসায় গিয়ে বিকৃত যৌনাচারে নিহত হওয়া স্কুলছাত্রী আনুশকা নুর আমিন। শনিবার সকালে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কমলাপুরের গোপালপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। তার আগে সকাল ৭টা ৫ মিনিটের সময় গোপালপুর ঈদগা মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রাত ১টার দিকে আনুশকার লাশ ঢাকা থেকে নিজ বাড়িতে আসে।

আরও পড়ুন: গুরুপ স্টাডির কথা বলে ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: কারাগারে দিহান

ভোর থেকেই শত শত মানুষ তাকে শেষবার দেখতে ভিড় করেন। নিকটজন আত্মীয়-স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন বাবা আল আমিন আহম্মেদ। নামাজের জানাজাতে অংশ নিয়ে এলাকাবাসী এই হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। দাফন শেষে তাৎক্ষণিকভাবে হত্যাকারীর দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেন তারা। কমলাপুর বাজারে সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে শত শত মানুষ এই মানববন্ধনে অংশ নেন।

মানববন্ধনে স্কুলছাত্রীর বাবা আল আমিন আহম্মেদ, ছোট ভাই নিভানসহ আত্মীয়-স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়রা এই হত্যার দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এমন ঘটনা যেন আর কারও সঙ্গে না ঘটে সেই জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা। চাচা অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম সেনা অভিযোগ করেন, আনুশকার স্কুল সার্টিফিকেট এবং পাসপোর্টে সুনির্দিষ্ট বয়স উল্লেখ থাকলেও পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্টে আনুশকার বয়স দুই বছর বেশি করে দেখিয়েছে।

এ ছাড়া দুইদিন পূর্বে লাশের ময়নাতদন্ত করতে মর্গে নেয়া হলেও নানা গড়িমসি ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পর ময়নাতদন্ত শেষ করে। এ ছাড়া এজাহারকারী একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে বলে উল্লেখ করলেও পুলিশ এজাহারের দেওয়া অভিযোগ কাটছাঁট করেছেন। তিনি এর প্রতিবাদ জানিয়ে সঠিক তদন্তসহ ন্যায় বিচার দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, আনুশকা তার পরিবারের সঙ্গে ধানমন্ডিতে থাকেন। আনুশকা মাস্টারদার স্কুলে ও লেভেল পড়তেন। ৭ জানুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে আনুশকাকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে কৌশলে বাসায় নিয়ে যায় তার বন্ধু তানভীর ইফতেফার দিহান। সেখানে বিকৃত যৌনাচারে তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে হাসপাতালে নেয় দিহান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনুশকার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তানভীর ইফতেফার দিহানকে (১৮) একমাত্র আসামি করে কলাবাগান থানায় মামলা করেছেন নিহতের বাবা আল আমিন আহম্মেদ। কলাবাগান থানা-পুলিশ দিহানকে গ্রেপ্তার করেছে। ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে।