দুর্ণীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরামের উদ্যাগে শ্রেষ্ট জয়িতা রুবিনাকে সংবর্ধনা

প্রকাশিত : ২৮ জানুয়ারি ২০২১

মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার: “সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান নারী” ক্যাটগরীতে কমলগঞ্জ উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ট জয়িতার সম্মাননা গ্রহণ করায় দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম মৌলভীবাজার জেলা শাখার উদ্যাগে শ্রেষ্ট জয়িতা রুবিনা আক্তারকে ফুলেল শুভেচ্ছো ও সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব এড. মাহবুবুল আলম শামীম এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মশাহিদ আহমদ এর সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্টানে সংবর্ধিত অথিতি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন- দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম জেলা শাখার মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও “সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান নারী” ক্যাটগরীতে কমলগঞ্জ উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ট জয়িতা রুবিনা আক্তার।

অনুষ্টানের শুরুতেই সভাপতি,সাধারণ সম্পাদকসহ সংগঠনের নের্তৃীবৃন্দরা রুবিনাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ জাফর ইকবাল, দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শেখ ফয়েজ আলী, জ্যের্তিময় চক্রবর্তী, মোঃ জব্বার তালুকদার, সিনিয়র সদস্য মোবাশ্বির আহমদ, সাংবাদিক আব্দুল বাছিত খান, যুব ফোরামের সহ- সাধারণ সম্পাদক এমএ সামাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ কাইয়ুম সুলতান, অঞ্জন প্রসাদ রায় চৌধুরী, মোঃ মঈনুল হক, সাহাবুদ্দিন, রিপন মিয়া, সাংবাদিক রুবেল রানা চৌধরী, নাছরিন প্রিয়া, ফজলুর রহমান, বুলবুল খান, রাহাত আহমদ সিফন, বিকাশ দাশ, যাদু মনি ধর, মোঃ ছালেহ আহমদ, মোঃ তাজ চৌধুরী প্রমুখ। উল্লেখ্য- কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের তোয়াহিদ মিয়ার স্ত্রী রুবিনা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন একজন স্বেচ্ছাসেবী মহিলা হিসেবে।

সমাজ উন্নয়নে তার এই অক্লান্ত পরিশ্রম এবং ত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে কমলগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় তাকে ২০২০ সালে “সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী” ক্যাটগরীতে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা প্রদান করেন। বেকার স্বামীর গরীব সংসারেই একে একে রুবিনার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জন্ম হওয়ার পর সংসার যখন করুণ অবস্থায় পদার্পন করে, তখন তিনি নিজেই হাল ধরেন সংসারের। ২০০২ সালে কাজে যোগ দেন একটি ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে। কাজ করতে গিয়ে গ্রামের মানুষের কাছে খারাপ মেয়ে হিসেবে চিহ্নিত হয়ে নানাজনের নানা মন্তব্যের কারণে তিনি ইন্সুরেন্সের কাজ ছেড়ে প্রাইভেট পড়াতে লাগলেন। এসএসসি’র মতো কম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে তিনি এখানেও বিভ্রান্তিতে পড়েন। ছাত্র-ছাত্রী কম এবং বেতনও কম থাকায় তিনি সংসারসহ ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন।

সে অবস্থায় তার ইন্সুরেন্স জীবনে কাজ করার সময় অবলোকন করা- নারীদের প্রতি সমাজের বিভিন্ন অসংগতি বিষয়গুলো তাকে ভাবিয়ে তুলে। নারী নির্যাতন, বাল্য বিবাহ, শিশুশ্রম, ন্যায় বিচারহীনতাসহ সমাজের অবহেলিত নারীদের দুঃখ কষ্ট মনে নাড়া দেয়। এক পর্যায়ে তিনি স্বেচ্ছায় বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন নিয়ে কাজ করেন। নিজের সংসার, সন্তানের ভরন পোষনের খরচ এবং সমাজের অবহেলিত বিপন্ন নারীদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় নিজের সম্বল হাঁস-মুরগি, ডিম, ছাগল, সবজি ইত্যাদি বিক্রি করতে বাধ্য হন।

একজন সমাজসেবক হিসেবে তিনি যখনই কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন তখনই তাকে “একজন নারীর এমন বেহায়াপনার মতো কাজ করা ঠিক নয়” বলে অপমান করা হয়েছে। তারপরও তিনি থেমে থাকেননি। ঝড় তুফানে কারো ঘর ভেঙ্গে গেলে বাঁশ দিয়ে সাহায্য করেছেন। মেম্বার, চেয়ারম্যানের তহবিল থেকে কাউকে ভাতা, ত্রাণ এনে দিয়েছেন। কারো কোন সমস্যা হলে- যেখানে গেলে সমস্যার সমাধান হবে সেখানে নিয়ে গেছেন। অসুস্থ রোগীকে তার চিকিৎসার বন্দোবস্ত করেছেন।

 

আপনার মতামত লিখুন :