লক’ডাউনে পদ্মার চরে স্থানীয়দের সহায়তায় শি’শুর জন্ম দিলেন নারী

প্রকাশিত : ১০ মে ২০২১

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের পাইনপাড়া এলাকার লকডাউনের মধ্যে পদ্মা নদীর চরে নারী এক ফুটফুটে মেয়ের জন্ম দিয়েছেন। রবিবার বিকেল ৫টার দিকে ওই নবজাতকের জন্ম হয়। বর্তমানে মা ও সন্তান জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সন্ধ্যার দিকে পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সহকারী, স্থানীয় কয়েকজন ওই মা ও নবজাতকটিকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় হাসপাতাল থেকে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতালে যখন মা ও সন্তানকে আনা হয়েছিল, তখন তাদের শরীরে বালি ও মাটি লেগে ছিল। পরে তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। এ সময় জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মা ও সন্তানের জন্য কাপড়, খাবারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা করেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি ওয়ার্ডের একটি বিছানায় ওই মা ও নবজাতক ভর্তি আছেন। মা ও মেয়েকে দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে হাসপাতালে এসেছেন। সন্ধ্যা থেকে নবজাতকটি মায়ের কাছেই আছে। সে খুব ফুটফুটে। হাসপাতালের একজনের কোল থেকে আরেকজনের কোলে ঘুরছে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, সুমা আক্তার ও নাহিদ হোসেন দম্পতি ঢাকা লালবাগে থাকেন। তাদের বাড়ি বরিশাল হিজলাতে। তারা আজ ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে বরিশালে যাচ্ছিলেন। করোনাভাইরাসের কারনে এখন লকডাউন চলছে। এ জন্য লঞ্চ, ফেরি বন্ধ থাকায় ওই দম্পতি মাওয়া থেকে মাঝিরঘাট আসবেন বলে একটি ট্রলার ভাড়া করেন। কিন্তু ট্রলার চালক ওই দম্পতিকে পদ্মার নদীর চর পাইনপাড়া এলাকায় নামিয়ে দেয়।

চালক তাদের বলেন, এক কিলোমিটার হেঁটে গেলেই মাঝির ঘাট পৌঁছে যাবেন। কিন্তু পথ ছিল চার কিলোমিটার। ওই দম্পতি ট্রলার থেকে নেমে হাঁটছিলেন। পথিমধ্যে ওই চরে স্থানীয় নারীদের সহযোগিতায় ওই সুমা এক ফুটফুটে মেয়ের জন্ম দেন। বিষয়টি আমি জানতে পেরে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে ওই মা ও নবজাতককে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করা হয়। মা ও নবজাতক দুজনই ভালো আছেন। মা ও নবজাতকের যা যা প্রয়োজন আমরা ব্যবস্থা করব।

জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, স্থানীয় নারীদের সহযোগিতায় পদ্মার চরে এক মেয়ে শিশুর জন্ম দেন ওই নারী।

তিনি বলেন, ইউএনও বিষয়টি আমাকে জানালে আমি পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সহকারী আক্কাস চৌকিদার, মাঝির ঘাটের ব্যবসায়ী রাজ্জাক মাঝি ও স্থানীয় কয়েকজনকে চালকসহ ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পাঠিয়ে ওই মা ও নবজাতককে হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করি। তিনি জানান, এখন নবজাতক ও মা দুজনই সুস্থ আছে। দুজনকেই সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা আমার তত্ত্বাবধানে আছে।

সূত্র : দেশ রূপান্তর

আপনার মতামত লিখুন :