করোনায় হিন্দু নারীর মরদেহ মুসলিম যুবকদের কাঁধে!

প্রকাশিত : ১৩ জুলাই ২০২১
ছবি : সংগৃহীত

মাইনুল ইসলাম রাজু, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি। বরগুনার আমতলী পৌর শহরের পুরান বাজারের বাসিন্ধা ও বাংলাদেশ বেতারের বিশিষ্ট কন্ঠশিল্পি স্বর্গীয় প্রিয় বল্লব কর্মকারের স্ত্রী রানু কর্মকার (৭০) গতকাল (সোমবার) বিকেলে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরলোক গমন করেন।

স্বতকারের জন্য গতকাল সন্ধ্যার পরে মৃত্যের মরদেহ পটুয়াখালী থেকে এ্যাম্বুলেন্সে যোগে আমতলীর বাসায় নিয়ে আসলে করোনার ভয়ে মৃতের মরদেহের কাছে তার কোন আতœীয়-স্বজন আসেনি। এমনকি এ্যাম্বুলেন্স থেকে মরদেহ নামাতে পর্যন্ত কেহ এগিয়ে আসেনি। এ্যাম্বুলেন্সে মায়ের মরদেহ রেখে তার দুই পুত্র লিটন ও অনুপ কর্মকার প্রায় এক ঘন্টা সেখানে অপেক্ষা করতে থাকে। এ খবর দ্রæত ওই এলাকায় ছড়িয়ে পরে।

এ খবর শুনে সাহায্যের জন্য ছুটে আসে স্থাণীয় মুসলিম পরিবারের দুই যুবক পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের মরহুম আঃ আজিজ মাস্টারের পুত্র বিদেশ ফেরত মোঃ ফিরোজ শাহ্ এবং ৪নং ওয়ার্ডের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মঞ্জুরুল আলম মৃধার পুত্র তারেক। তারা হিন্দু মায়ের দুই পুত্রের সাথে মরদেহের খাটিয়া এ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে নিজেদের কাধে চেপে শ্বশানে স্বতকারের জন্য নিয়ে যায়। করোনায় মানবতার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মুসলিম পরিবারের ওই দুই সাহসী যুবক।

সাহসী যুবক ফিরোজ শাহ মুঠোফোনে বলেন, আমাদের ধর্ম আলাদা হলেও আমরা একই সমাজে বসবাস করি। যখন দেখলাম করোনার ভয়ে আতœীয়-স্বজনসহ কেহ মরদেহের কাছে আসছেনা তখন আমরা দু’জন এগিয়ে এসেছি তাদের সাহায্য করতে। আরেক সাহসী যুবক তারেক জানান, দেখলাম মরদেহটা তার দুই পুত্র বহন করতে পারছেনা। তখন নিজের বিবেকে বাঁধলো তাই ছুটে এসেছি। মরদেহ স্বতকারের জন্য কাধে তুলে শ্বশানে পৌছে দিয়েছি।

তবে রানু কর্মকারের মৃত করোনায় হয়েছে কি না সেই রিপোর্ট না পাওয়ায় মৃত্যুর সঠিক কারনটা জানা যায়নি। তবে তিনি করোনা উপসর্গ নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এদিকে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই এলাকার সকলের মাঝে আতংক বিরাজ করছে একাধিক ব্যক্তিরা জানায়।

আপনার মতামত লিখুন :