সবুজ বিপ্লবে নেমে পরেছে উপকূলের মানুষ: কলাপাড়ায় হাট বসেছে চারা গাছের

প্রকাশিত : ২৪ আগস্ট ২০২১

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ২৪ আগস্ট।। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় হাট বসেছে চারা গাছের। বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা। যেন সবুজ বিপ্লবে নেমে পরেছে উপকূলের মানুষ। বৃক্ষপ্রেমীরা পৌর শহরের এ হাট থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার এসব চারা গাছ। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সরকারি ও বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা বিতরন করছে ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা। আর প্রতিযোগিতা মূলক ব্যক্তি উদ্যোগে গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনাসহ পরিত্যক্ত জমিতে এসব গাছের চারা রোপন করা হচ্ছে। এর ফলে এক সময় এ এলাকা সবুজ দেয়াল দ্বারা বেষ্টিত হবে এমনটাই মনে করছেন পরিবেশবিদরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের লঞ্চ ঘাট এলাকায় সপ্তাহে একদিন বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছের হাট বসে। আর এ হাট থেকে ক্রেতারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে চাম্বল, রেন্ডি কাট্ট, মেহগনি, আকাশমনি, লেবু, আম, কাঠাল, মালটা, পেয়ারা, আমড়া, কামড়াঙ্গা ইত্যাদি গাছের চারা। এছাড়া লাউ, বোম্বাই মরিচ, বেগুনসহ বিভিন্ন জাতের সব্জির চারা বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। এসব চারা গাছ গুলো স্বারুপকাঠি সহ বিভিন্ন নার্সারি থেকে ক্রয় করে ট্রলার যোগে নিয়ে আসে এ হাটে। প্রকার ভেদে গাছের চারাগুলো বিভিন্ন দামে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি হাটে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার গাছের চারা বিক্রি করছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঝড়-জলোচ্ছ¡াস থেকে রক্ষা পেতে উপজেলার ১২ ইউনিয়সহ দু’টি পৌর সভার পাড়া মহল্লার যেন সবুজ বিপ্লবে ঘটেছে। চারিদিকে শুধুই সবুজের সমারোহ। কেউ বাড়ির উঠোনে। আবার কেউ কেউ পরিত্যক্ত জমিতে ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপন করছে। এছাড়া অনেকে আবার বাসা বাড়ির ছাদে বাগান গড়ে তুলেছেন। এদিকে বেশ কিছু সরকারি ও বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা তৃণমূল পর্যায়ের রাস্তার দু’পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপান করছে।

চারা গাছ বিক্রেতা সোহাগ হাওলাদার বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের চারা গাছ রোপনে আগ্রহ বেড়ে গেছে। এর ফলে প্রতি মঙ্গলবার এ হাটে গাছের চারা বিক্রি করতে আসি। এ বছর এ পর্যন্ত এক থেকে দেড় লাখ চারা গাছ বিক্রি করেছেন। এসব চারা গাছ গুলো স্বারুপকাঠি সহ বিভিন্ন নার্সারি থেকে ক্রয় করে ট্রলার যোগে এই হাটে নিয়ে এসেছে বলে তিনি জানান।

বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড কনসার্ন বাংলাদেশ কলাপাড়া উপজেলা সমন্বয়কারী জেমস্ রাজিব বিশ্বাস বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলার বালিয়তলী, মহিপুর ও লতাচাপলী ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটার সড়কের উভয় পার্শ্বে চার হাজার বনজ বৃক্ষ রোপন করা হয়েছে। আর ওইসব গাছের চারা রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব পালন করবে স্থানীয় ওয়ার্ড দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। এ গাছই একদিন জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ন ভ‚মিকা রাখবে বলে তিনি জানান।

উদ্ভিদ বিজ্ঞান প্রভাষক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, একমাত্র গাছই পারে জীবন বাঁচাতে। তাই ব্যক্তি উদ্যোগে পরিত্যক্ত জমিতে প্রত্যেকের চারা গাছ রোপন করা উচিৎ। বন বিভাগের কলাপাড়া উপজেলা ফরেস্ট অফিসার মো.আব্দুস সালাম বলেন, এ উপজেলায় প্রায় দেড় লাখ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রাপন করা হয়েছে। রোপনকৃত গাছের চারাগুলো এক সময় এ সমুদ্র উপকূলীয় এলকা সবুজ বেস্টরি তৈরি হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

 

আপনার মতামত লিখুন :