কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ৬

প্রকাশিত : ২৩ অক্টোবর ২০২১

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় নিহতদের সংখ্যা ৭ জন নয়, মূলত এ ঘটনায় নিহত হয়েছে ৬ জন। আর ঘটনাটি সংঘর্ষ নয়, একটি মাদরাসায় পরিকল্পিত হামলা ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) অধিনায়ক পুলিশ সুপার মো. শিহাব কায়সার খান বলছেন, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১৮ নম্বর ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ হামলা হয়। নিহতরা সবাই ওই ক্যাম্পের এইচ-৫২ ব্লকের ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদরাসার শিক্ষক, ছাত্র বা ভলান্টিয়ার।

শিহাব কায়সার বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ক্যাম্পে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছি আমরা। এপিবিএনের পক্ষ থেকে আগে সাতজনের মৃত্যুর কথা জানানো হলেও উখিয়া থানার ওসি আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ পরে জানান, ছয়জনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় আরো একজনকে পাঠানো হয়েছে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা সকালে ওই মাদরাসা পরিদর্শন করেন।

এপিবিএন এর এক বার্তায় হামলাকারীদের বর্ণনা করা হয়েছে ‘রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারী’ হিসেবে। সেখানে বলা হয়, হামলায় ঘটনাস্থলেই চার রোহিঙ্গা নিহত হন। খবর পেয়ে ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে বাকিদের মৃত্যু হয়। স্থানীয়ভাবে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, ওই মাদরাসার মেঝেতে রক্ত ছড়িয়ে আছে। নিহতদের স্বজনরা সেখানে বিলাপ করছেন। হামলায় জড়িত সন্দেহে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার নাম মুজিবুর রহমান। তার কাছ থেকে একটি ওয়ান শুটারগান, ৬ রাউন্ড গুলি ও একটি ছুরি উদ্ধারের কথা জানিয়েছে এপিবিএন।

কর্মকর্তারা বলছেন, ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় ‘মদুতুল উম্মা’ মাদরাসা ও আশপাশের এলাকায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ‘ব্লকরেইড’ (ঘেরাও করে তল্লাশি) চালিয়েছিলেন। অন্যান্য ক্যাম্প এলাকাতেও একই সঙ্গে অভিযান চালানো হয়েছে। এর ঘণ্টা দেড়েক পর দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদরাসায় ওই হামলা হয়।

নিহতরা হলেন ওই মাদরাসার শিক্ষক ১২ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. ইদ্রীস (৩২), নয় নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা ইব্রাহীম হোসেন (২৪), মাদরাসার ছাত্র ও ১৮ নম্বর ক্যাম্পের আজিজুল হক (২২), একই ক্যাম্পের ভলান্টিয়ার মো. আমীন (৩২), মাদরাসার শিক্ষক ও ১৮ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫), মাদরাসার শিক্ষক ও ২৪ নম্বর ক্যাম্পের হামিদুল্লাহ (৫৫)।

এছাড়া ওই মাদরাসার ছাত্র ও ১৮ নম্বর ক্যাম্পের নুর কায়সারকে গুরুতর আহত অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে উখিয়া থানার ওসি আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ পরে জানান।

আপনার মতামত লিখুন :