চাচার পা ধরেও গণধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পাননি তরুণী

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২

পিরোজপুরে প্রতিবেশী চাচার পা ধরেও গণধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পাননি ১৮ বছরের এক তরুণী। মা-বাবা অসুস্থ মেয়েকে বাসায় রেখে বিয়ের অনুষ্ঠানে গেলে এই সুযোগে বাসার পেছনের দরজা খুলে ঐ তরুণীর ওপর ঝাপিয়ে পড়ে প্রতিবেশী চাচাসহ তিন বখাটে। এ সময় তার মুখ চেপে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে কবির শেখ, রাব্বী গাজী ও হৃদয় গাজী তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষকরা ক্ষমতাশালী হওয়ায় আতঙ্কে আছে ঐ পরিবার। মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন এলাকাবাসীরাও। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ভিকটিমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় অভিযুক্ত তিন ধর্ষককে।

বুধবার বিকেলে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বাঘাজোড়া গ্রামে অসুস্থ মেয়েকে বাসায় ঘুমিয়ে রেখে বিয়ের অনুষ্ঠানে যান বাবা-মা। তখন ঐ তরুণী বাসায় একা। বিষয়টি টের পেয়ে প্রতিবেশী চাচা মো. কবির হোসেন ডেকে আনেন আরো দুই সহযোগী রাব্বি শেখ ও হৃদয় গাজীকে। এরপর বাসার পেছনের দরজা খোলার চেষ্টা চালালে এক সময় কৌশলে দরজা খুলতে সক্ষম হন তারা। পরে ঘুমন্ত ঐ তরুণীর ওপর ঝাপিয়ে পড়ে এই তিন ধর্ষক।

ঐ তরুণী জানান, মুখ চেপে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে প্রথমে কবির শেখ এরপর রাব্বী গাজী ও হৃদয় গাজী তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। শুধু ধর্ষণই নয়, তরুণী অসামাজিক এই কাজে লিপ্ত হতে রাজি না হওয়ায় তার ওপর চলে শারীরিক নির্যাতনও। ভিকটিম তরুণী আরো জানান, কবির চাচার পা ধরে অনুরোধ করলেও তিনি কথা শুনেননি। সেই আমাকে আগে ধর্ষণ করে।

নির্যাতনের শিকার তরুণীর পরিবারের দাবি, এই বখাটেরা প্রতিদিনই উত্যক্ত করতো তাদের মেয়েদের। বিভিন্ন সময় দিতেন কুপ্রস্তাব। এ নিয়ে প্রশাসন বা এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিচার চাইলেও কোনো লাভ হয়নি। কারণ বখাটেদের মধ্যে প্রধান কবির হোসেনের বাবা হায়দার গাজী একজন পুলিশ কর্মকর্তা। যার কারণে বারবারই ছাড় পেয়েছে বখাটেগুলো।

এদিকে ধর্ষণের সঙ্গে ক্ষমতাশালী পরিবার যুক্ত থাকায় মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন অনেকেই। আবার কেউ কেউ বিবেকের তাড়নায় চাচ্ছেন কঠিন বিচার। বাঘাজোড়া গ্রামে এক যুবক জানান, বখাটে কবির শেখ প্রায়ই এলাকায় স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের উত্যক্ত করে এবং কবিরের নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং তৈরি হয়েছে। ওরা সবাই মিলে এক সঙ্গে মাদক সেবন করে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্ডার খাইরুল হাসান জানান, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ভিকটিমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় অভিযুক্ত তিন ধর্ষককে। তরুণী নিজে বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ধর্ষণ করে কেউই ছাড় পাবে না, সে যতই ক্ষমতাশালী হোক না কেনো। পিরোজপুরে দিনদিন বাড়ছে নারী ওপর ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা। এর আগেরও নাজিরপুর উপজেলায় ঘটেছে একাাধিক ধর্ষণের ঘটনা। ধর্ষণ ও নির্যাতন রুখতে সামাজিক জনসচেতনতা জরুরি বলছেন জেলার নারী নেত্রীরা।

আপনার মতামত লিখুন :