হাকালুকি হাওরে বিরল জলজ টর্নেডো

প্রকাশিত : ২৪ জুলাই ২০২২

দেখে মনে হচ্ছে, হাওর থেকে পাইপ দিয়ে পানি উঠে যাচ্ছে আকাশে। এমন একটি দৃশ্যের ভিডিও ছড়িয়ে পরেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। দৃশ্যটি দেশের সর্ববৃহৎ হাওর মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরের। ভিডিওটি শেয়ারের পর থেকে অনেকেই একে অলৌকিক বা অতিপ্রাকৃত বলছেন। তবে, আবহাওয়া অফিস বলছে, টর্নেডোর কারণে এমনটি ঘটেছে।

শনিবার (২৩ জুলাই) বিকেলে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা থেকে স্থানীয় ব্যক্তিরা এ টর্নেডো বা জলস্তম্ভ দেখতে পায়। এ দৃশ্যে হাওরপাড়ে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়। বিগত ৫০ বছরের মধ্যে হাওরে এমন দৃশ্যের দেখা মেলেনি বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তবে, এটির দ্বারা কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী জাপানের কাইটো বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ের প্রফেসর ড. শি থাইচি হায়াসিসের বরাত দিয়ে বলেন, এটি এক ধরনের টর্নেডো। মূলত টর্নেডোর কারণে এ রকমটি হয়ে থাকে। তবে এ ধরনের ঘটনা সচরাচর কমই দেখা যায়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জল দিয়ে মোড়ানো বাতাসের তৈরি টর্নেডোর ফলে এটি সৃষ্টি হয়। জলভাগের ওপর শক্তিশালী টর্নেডো সৃষ্টি হলে প্রবল বেগে ঘূর্ণমান বায়ুর টানে জলভাগের জল টর্নেডোর কেন্দ্র বরাবর স্তম্ভাকারে ঘুরন্ত অবস্থায় ওপরে উত্থিত হয়। একে জলজ টর্নেডো বা জলস্তম্ভ (Water Spout) বলে। গ্রামাঞ্চলে এটি ‘মেঘশূর’ নামেও পরিচিত।

দেখতে টর্নেডোর মতো হলেও টর্নেডোর সঙ্গে এর মৌলিক পার্থক্য হয় উপাদানে। টর্নেডোতে থাকে বায়ু আর জলস্তম্ভে বায়ুর পরিবর্তে থাকে পানি। জলস্তম্ভ সাধারণত পানিতেই থাকে বলে জনপদে আহামরি ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালাতে পারে না। আর, স্থলভাগের স্পর্শে আসলে এটি গুঁড়িয়ে যায়।

জুড়ী উপজেলার বাসিন্দা কুতুব উদ্দিন জসিম জানান, এমন দৃশ্য বেশ কয়েক বছর আগেও হাকালুকিতে দেখা গিয়েছিল বলে শুনেছি। তবে, জলস্তম্ভ দ্বারা কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর জানা যায়নি। বিকেলে ঘণ্টাখানেক থেকে পরে অন্ধকারে বিলীন হয়ে যায় এটি।

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার বলেন, বিরল হলেও এমনটা হাওর এলাকাতে হয়ে থাকে।

আপনার মতামত লিখুন :