ঝালকাঠিতে ডাকাত আতঙ্ক, মসজিদে মসজিদে মাইকিং, রাত জেগে পাহাড়া

প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল ২০২০

রহিম রেজা. ঝালকাঠি থেকে: ঝালকাঠিতে ডাকাত আতঙ্কে মসজিদে মসজিদে সতর্কতামূলক মাইকিং করা হয়েছে। মাইকের ঘোষণা শুনে রাত জেগে নিজ এলাকাকে পাহাড়া দিয়েছেন গ্রামবাসী। ঝালকাঠির প্রত্যন্ত এলাকায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ( বুধবার রাত আড়াইটায়) এ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে সচেতনরা এটিকেও থানকুনি পাতা সেবনের মতোই গুজব বলে মনে করছেন।

জানাগেছে, “বাড়িতে করোনা রোগী আছে এ সন্দেহে রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অথবা ডাক্তার পরিচয়ে ঘরে ঢুকে রোগী সনাক্ত এবং চিকিৎসা করাতে একদল লোক প্রবেশ করবে। তাদের দেহে পার্সনাল প্রোটেক্ট ইকুয়েপমেন্ট পরিহিত থাকবে। এমন অবস্থায় ডাকাতদল ঢুকে সর্বস্ব লুট করে নিবে।” গভীর রাতে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে চতুর্দিকে। গ্রাম্য এলাকার লোকজন সজাগ হয়ে যে যার মতো করে গ্রামবাসীকে সচেতন করেন। মসজিদের মাইকেও ডাকাত আতঙ্কের ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীকে সচেতন করে সংশ্লিষ্টরা। গুয়াটন গ্রামের আসাদ ফরাজি রাত সাড়ে ৩টার দিকে এক আত্মীয়কে ফোন দিয়ে জানান, রাতে ডাকাত পড়েছে।

আমরা রাস্তায় পাহাড়া দিতেছি। আমাদের এদিকে আসতে না পেরে আপনাদের দিকেও যেতে পারে। সজাগ ও সচেতন করতে ভোররাতে ফোন করেছেন। রাজাপুর উপজেলার বলাইবাড়ি ইউসুফ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় (ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা) শিক্ষক মাওলানা কবির খান জানান, এটা থনকুনি পাতার মত সবখানেই মাইকে ও মোবাইলে বলা হয়েছে। রাজাপুর উপজেলার সাকরাইল গ্রামের আবুল হাসান জানান, রাতে করোনার কথা বলে এলাকায় ডাকাত প্রবেশের কথা ছড়িয়ে পড়ে।

বিভিন্ন মসজিদে মাইকিংও শুনতে পাওয়া গেছে। গুয়াটন, শ্রীমন্তকাঠি এলাকার মসজিদে মাইকিং শুনে আমরা গ্রামবাসীকে সজাগ করে পাহাড়া বসিয়েছি। সোয়া ৪টা পর্যন্ত রাস্তা পাহাড়ায় ছিলাম, এরপর অযু করে ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমাইছি। ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিকনা এলাকার সমাজকর্মী আরিফুল ইসলাম খান ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে সোমবার বিকেলে একটি সচেতনতামূলক ম্যাসেজ ছড়িয়ে দেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, বাড়িতে করোনা রোগী আছে এ সন্দেহে যদি রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে কেউ আসে তাহলে ঘরের দরজা খুলবেন না।

তাদের সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে অনুরোধ করা অথবা পুলিশের জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে অবহিত করা। লকডাউন এলাকায় ডাকাতদল পিপিই, রেইনকোড ও মাস্ক পড়ে ছদ্মবেশে করোনা রোগী খোজে বিল্ডিং বা বাসায় ঢোকার চেষ্টা করবে। সবাই সতর্ক থাকুন। কিছু সন্দেহ হলে স্থানীয় প্রশাসনকে জানান, তাই আপনার সচেতনতাই পারে আপনার পরিবারকে নিরাপদে রাখতে। ব্যক্তি দূরত্ব বজায় রাখুন, নিজে নিরাপদে থাকুন, পরিবারকে নিরাপদে রাখুন।

 

আপনার মতামত লিখুন :