বাউফলে যুবলীগ কর্মী তাপস হত্যা; পৌর মেয়র ও আওয়ামীলীগের সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত : ২৬ মে ২০২০

হারুন অর রশিদ, বাউফল প্রতিনিধি: তোরণ নির্মাণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে বাউফল পৌর মেয়র সমর্থিত লোকজনের হাতে নিহত হয় স্থানীয় এমপি ও সাবেক চীফহুইপ আ.স.ম ফিরোজ সমর্থিত যুবলীগ কর্মী তাপস দাস (২৯)। এ ঘটনায় গত সোমবার নিহত তাপসের বড় ভাই পংকজ দাস বাদী হয়ে বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হক জুয়েলকে প্রধান আসামী করে ৩৫জনের নাম উল্ল্যেখ করে ও অজ্ঞাত চার -পাঁচজনসহ মামলা দায়ের করেছেন। এ দিকে হত্যার সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে সোমবার বিকাল সারে তিনটায় পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড থেকে মেয়র সমর্থিত সোহাগ (৩৫) ও কার্তিক (৩৫) নামের দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগ ও মেয়র জুয়েল পৃথক সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। মেয়রের পক্ষে বাউফল পৌর কমিশনার বাবুল খান দুপুর ১২টায় পৌর ভবনে সাংবাদিক সমম্মেলন করে মেয়রকে নির্দোষ দাবি করেন।

অপর দিকে বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের বিকেল ৪টায় বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শামশুল আলম মিয়ার সভাপতিত্বে বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয় জনতা ভবনে ইপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদার স্বাক্ষরিত দলের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাউফল পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি ইব্রাহিম ফারুক। লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন- মেয়র জুয়েলের উপস্থিতিতে এবং তার নির্দেশেই যুবলীগ কর্মী তাপস হত্যাসহ ১৫ নেতাকর্মীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে তার সন্ত্রাসীরা। প্রশাসনের চোখের সামনে নিজেকে নির্দোশ দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করা নির্লজ্জ দৃষ্টতার সামিল। সম্মেলনে মেয়র জুয়েল সহ অন্যান্য আসামীদেরও গ্রেফতারের দাবী করেন। লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, জুয়েল মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পড়ে উপজেলার যুব সমাজের হাতে অ¯্র তুলে দিয়ে শান্ত বাউফলকে অশান্ত করে রেখেছেন, যার সাক্ষী বাউফলবাসী। এ সময় উপস্থিত নিহত তাপসের বড় ভাই মামলার বাদী পংকজ দাস তার ভাইয়ের খুনের বিবরন দিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আওয়ামীলীগের সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বাউফল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, শাহীন হাওলাদার, বাউফল পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি ইব্রাহিম ফারুক চেয়ারম্যান, সাধারন সম্পাদক এনায়েত খান সানা, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি শাহজাহান সিরাজ, সাধারন সম্পাদক মনির মোল্লা চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ সদস্য, ১৩ ইউ.পি চেয়ারম্যান, বাউফল পৌর ও উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মী প্রমুখ।

উল্ল্যেখ, বাউফল থানা ও জেলা পরিষদ বাংলোর সামনে তোরণ নির্মানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত রবিবার দুপুরে সাবেক চিফ হুইপ বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আসম ফিরোজের সমর্থিত নেতা কর্মীদের সাথে বাউফল পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েলের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আসম ফিরোজ সমর্থিত যুবলীগ কর্মী তাপস দাস (২৯)কে ধারালো অ¯্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে মেয়র সমর্থিত লোকজন। এ ঘটনায় ১৫জন নেতা কর্মী আহত হয়। ওই দিনই গুরুতর আহত অবস্থায় তাপস ও ইমাম নামের আরেক যুবলীগ কর্মীকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসারত অবস্থায় ওই দিনই রাত সাড়ে ৭টায় তাপসের মৃত্যু হয়।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সোমবার রাত সারে দশটায় তাপস হত্যা ঘটনায় পৌর মেয়র জুয়েলকে প্রধান আসামী করে ৩৫জনের নাম উল্লেখখ করে একটি এজাহার দাখিল করা হয়েছে। যার মামলা নং-১৬। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

 

আপনার মতামত লিখুন :