সামাজিক বনায়নে দশমিনায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা

প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর ২০২০

দশমিনা(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর দশমিনায় সড়কের দুই পাশে ক্ষতিকর বিভিন্ন প্রজাতের গাছে সামাজিক বনায়নে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে চাষি। এসব জমিতে চাষাবাদকৃত কৃষকরা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় ধরে সড়কের ধারে দ্রæত বৃদ্ধিকারী ও পরিবেশর এ ধরনের গাছের বনায়ন করা হচ্ছে। অল্প সময়ে অধিক লাভের আশায় বন-বিভাগের মাধ্যমে গাছ দিয়ে বনায়ন করছে। এসব গাছের বনায়নে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, বনবিভাগের মাধ্যমে গত কয়েক দশক ধরে দেশি বিদেশী প্রজাতির গাছ দিয়ে বনায়ন শুরু হয়। অল্প সময়ে অধিক লাভের আশায় স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য রাস্তার দুই পাশে এসব বনায়ন করা হচ্ছে। কৃত্রিমভাবে সামাজিক বনায়ন এবং ব্যক্তি উদ্যোগে বসত বাড়ির আশেপাশে এজাতীয় গাছের শোভা পায়। এই গাছগুলো বিদেশী প্রজাতির আগ্রাসী গাছ হিসাবে পরিচিত। এসকল গাছের ছায়ায় পড়ে ধান গাছে রোগ ও পোকার আক্রমন মারাত্মক হারে বৃদ্ধ পাচ্ছে। গাছের পার্শ্ববর্তী এলাকায় ধানক্ষেত বিনষ্ট হয়। আকাশি গাছের পাতা সহজে পঁচে না এবং কৃষিক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি সৃষ্টি করে। প্রকৃতি, পরিবেশ ও কৃষিক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি বয়ে আনা গাছ দিয়ে বনায়ন বন্ধের দাবি তুলেছেন পরিবেশবিদ ও গবেষকরা। উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও গ্রামগঞ্জের রাস্তার দু’পাশে এসব গাছের সামাজিক বনায়নে ভরে উঠছে।

বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিন দাসপাড়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর রাড়ী, মজিদ হাওলাদার, জামাল হাওলাদার, খালেক রাড়ী ও শংকর চন্দ্রসহ আরও অনেকে বলেন, রাস্তার পাশে এসব গাছ গাছালি চাষাবাদে কৃষিজমি বিনষ্ট, মৎস্য চাষাবাদে ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাছের ছায়ায় ধানী জমির জায়গা দখল করে। চাষাবাদকৃত ধান গাছ কেটে গরুর খাদ্য ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। কৃষকরা আরও বলেন, আকাশি গাছের ছায়ায় ধান থেকে শুরু করে কোন ধরনের চাষাবাদ সম্ভব হয় না। একইভাবে মৎস্য খামারের পাশে এইসব গাছের কারনে মৎস্য চাষাবাদেও ক্ষতির কারন হয়ে দেখা দিয়েছে।

দক্ষিন দাসপাড়া আংশিক গছানীর সামাজিক বনায়ন কমিটির সাধারন সম্পাদক মোঃ সামছুল হক পরিবেশ কর্মী শাহ আলম বলেন, আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য নয় এমন প্রাতির গাছের বনায়ন শুরু হয়ে আসছে দীর্ঘ সময় ধরে। বিদেশী প্রজাতির এ গাছগুলো স্থানীয় প্রজাতিদের জায়গা দখল করে সেগুলোকে বিপন্ন করে তোলে। এই গাছগাছালি শুধু কৃষিক্ষেতই বিনষ্ট করে না, মৎস্য চাষাবাদেও ক্ষতি করে এবং পশুপাখির খাদ্য তৈরি করে না। তিনি আরও বলেন, যেকোনো প্রজাতি ভিন্ন পরিবেশ থেকে এনে বিস্তার ঘটাতে দিলে কালক্রমে তা হয়ে ওঠে আগ্রাসী প্রজাতি। আমাদের দেশেও এগাছগুলো আগ্রাসী হয়ে উঠছে এবং পরিবেশের ক্ষতি বয়ে আনছে।

এসব গাছ দিয়ে বনায়ন সম্পূর্ণরুপে বন্ধ হওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা বন-কর্মকর্তা অমিতাব চন্দ্র বলেন, পূর্বে এক সময়ে কাঠের চাহিদা মেটাতে এসব গাছ দিয়ে বনায়ন শুরু হয়। বর্তমানে এসব গাছ রোপন এবং সরকারি নার্সারীগুলোতে আকাশমনি, ম্যানজিয়াম গাছের চারা উৎপাদন সম্পূর্ণরুপে বন্ধ করা হয়েছে।

 

আপনার মতামত লিখুন :