কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের সাফল্যের চেয়ে দুর্নাম বেশি

প্রকাশিত : ৬ মার্চ ২০২২

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভ‚মি পর্যটন কেন্দ্র সাগরকন্যা কুয়াকাটায় প্রতিনিয়ত ট্যুরিস্ট পুলিশের অশোভন আচরণের শিকার হচ্ছে পর্যটক। বিয়ষটি নিয়ে ক্ষুদ্ধ হলেও ঝামেলা এড়াতে এ নিয়ে প্রতিবাদ করছেন অনেক পর্যটক। তবে সাম্প্রতিক সময় এক সিনিয়র গনমাধ্যমকর্মীর ফেইসবুক টাইম লাইনে ‘‘ট্যুরিস্ট পুলিশের জয় হোক! আর যাবো না কুয়াকাটা’’ শিরোনামের একটি লেখা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃস্টি হয়েছে। এতে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সেবার মান। ক্ষতির মুখে পড়েছে এ পর্যটন জোনের অর্জিত সুনাম। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুদ্ধ পর্যটন ব্যবসায়ীসহ সচেতন মহল।

সাংবাদিক রনজক রিজভী ২৫ ফেব্রæয়ারি (শুক্রবার) সাংবাদিকদের প্রশিক্ষন কার্যক্রমে অংশগ্রহনের জন্য ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় আসেন। সৈকতের লেম্বুরচর এলাকায় ঝাউবনে ঘুরতে গিয়ে তিনি মুখোমুখি হন ট্যুরিস্ট পুলিশের হেনস্তাসহ অশালীন বাক্যবানের। অনাকাংখিত এ ঘটনার জন্য তিনি দ্বায়ী করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর জুয়েলসহ সঙ্গীয় কলস্টেবলদের। তিনি ফেইসবুক স্ট্যাস্টাসে লিখেছেন কুয়াকাটা গিয়ে দেখে এলাম ট্যুরিস্ট পুলিশের বাহাদুরি। সমুদ্র সৈকতের লেম্বুরচর পার হয়ে ঝাউবনে ঘুরতে গিয়েই পড়লাম ঝামেলায়। নিরুপায় হয়ে আমরা তিনজন সেখান থেকে হাটতে শুরু করলাম। এক পর্যায়ে অন্য চালকরা পর্যটকদের নামিয়ে দিয়ে লেম্বুরবনের ফিসফ্রাই জোন থেকে আমাদের কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টে পৌঁছে দেন। বিষয়টি স্থানীয় ট্যুরিস্ট পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করলেও কোন প্রতিকার মেলেনি।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, কুয়াকাটায় অন্তত: ২০টি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। শুধুমাত্র জিরো পয়েন্ট এলাকায় ট্যুরিস্ট পুলিশ বক্সের আশেপাশের সৈকত এবং সূর্যাস্তকালীন সময় লেম্বুরবন এলাকায় তাদের টহল দেখা যায়। টেংরাগীরি (ফাতরার বন), সূর্যোদয়ের গঙ্গামতি, মিশ্রীপাড়া রাখাইন পল্লী-বৌদ্ধ বিহার ও সমুদ্র মাঝে জেগে ওঠা চর বিজয়ে প্রতিদিন অন্তত: কয়েক হাজার পর্যটক এসব দর্শনীয়স্থানে ভ্রমনে গেলেও এদের তথ্য উপাত্ত সংরক্ষন করছেন না তারা। এসব এলাকায় আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় নেই তাদের টহল।

কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের সাফল্যের চেয়ে দুর্নাম ছড়াচ্ছে বেশি। তারা ইচ্ছা করেই পর্যটকসহ স্থানীয়দের সাথে অশোভন আচরণ করে, যাতে তাদেরকে অন্যত্র বদলী করা হয়।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এসোশিয়েশন (কুটুম) সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, পর্যটকদের সাথে আচরণ, সেবার ধরন, নীতি ও নৈতিকতা বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষনের অভাব রয়েছে।

কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ বলেন, প্রত্যেক ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যকে অবশ্যই সদালাপি, মিষ্ট ভাষি ও পর্যটক বন্ধু সুলভ আচরন করতে হবে। তাহলেই পর্যটন কেন্দ্রর সুনাম বৃদ্ধিসহ দিন দিন পর্যটকের সংখা বৃদ্ধি পাবে।

কলাপাড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি জাহিদ রিপন বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তা ও সদস্যদের পর্যটন মনোভাবাপন্ন, সহনশীল, স্থিরচিত্তের করে গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কুয়াকাটার উদীয়মান পর্যটন শিল্পে।

এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক সাংবাদিকদের বলেন, পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ নিয়ে কাজ করছি। কোন পুলিশ সদস্য পর্যটকদের সাথে অশোভন আচরণ করলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

আপনার মতামত লিখুন :